ছোটখাটো অসুস্থতায় ঘরোয়া টোটকা কাজ দিলেও, জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়ে। রোগের সঠিক নিরাময়ের জন্য চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনই রোগীর পথপ্রদর্শক। কিন্তু অনেক সময় এই প্রেসক্রিপশনে এমন কিছু শব্দ বা সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করা হয়, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা কঠিন। ফলে ওষুধ সেবনের নিয়ম বা পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তাই, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের কিছু সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষার অর্থ জেনে রাখা প্রত্যেকের জন্য জরুরি।
চলুন, দেখে নেওয়া যাক তেমনই কিছু বহুল ব্যবহৃত ডাক্তারি পরিভাষা এবং তাদের অর্থ:
১. আর এক্স (Rx): এটি প্রেসক্রিপশনের শুরুতে লেখা থাকে এবং এর অর্থ হলো চিকিৎসা বা ‘চিকিৎসা গ্রহণ করুন’।
২. কিউ (Q): এর অর্থ প্রত্যেক বা ‘প্রতি’। যেমন, ‘Q4h’ মানে ‘প্রতি ৪ ঘণ্টা অন্তর’।
৩. কিউ ডি (QD): অর্থাৎ প্রতিদিন।
৪. কিউ ও ডি (QOD): এর অর্থ এই দিন ছাড়া প্রতিদিন।
৫. কিউ এইচ (QH): অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায়।
৬. এস (S): এর অর্থ বাদ দিয়ে বা ‘ছাড়া’। সাধারণত, ‘S food’ মানে ‘খাবার ছাড়া’।
৭. সি (C): অর্থাৎ সঙ্গে বা ‘সাথে’। যেমন, ‘C food’ মানে ‘খাবারের সঙ্গে’।
৮. এস ও এস (SOS): এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা, যার অর্থ জরুরি ভিত্তিতে করণীয় বা ‘যখন প্রয়োজন হবে’।
৯. এ সি (AC): অর্থাৎ খাবার খাওয়ার আগে।
১০. পি সি (PC): অর্থাৎ খাবার খাওয়ার পরে।
১১. বি আই ডি (BID): এর অর্থ দিনে দু’বার।
১২. টি আই ডি (TID): অর্থাৎ দিনে তিন বার।
১৩. বি ডি / বি ডি এস (BD / BDS): এর অর্থও দিনে দু’বার ওষুধ নিতে হবে।
১৪. টি ডি এস (TDS): অর্থাৎ দিনে তিন বার ওষুধ নিতে হবে।
১৫. কিউ টি ডি এস (QTDS): এর অর্থ দিনে চার বার ওষুধ নিতে হবে।
১৬. বিটি (BT): অর্থাৎ শোয়ার সময় বা ‘ঘুমোতে যাওয়ার আগে’।
১৭. বিবিএফ (BBF): অর্থাৎ প্রাতরাশের আগে।
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা:
তবে মনে রাখতে হবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানভেদে এই সাংকেতিক চিহ্ন বা পরিভাষা বদলাতেও পারে। অনেক সময় চিকিৎসকরা তাঁদের নিজস্ব পদ্ধতিতে নির্দেশ লিখতে পারেন। তাই, প্রেসক্রিপশনের কোনো অংশ বুঝতে অসুবিধা হলে বা এই সংক্রান্ত কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে সরাসরি আপনার চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করাই সবচেয়ে ভালো এবং বাঞ্ছনীয়। নিজের অনুমান বা ইন্টারনেট থেকে পাওয়া অসম্পূর্ণ তথ্যের ওপর নির্ভর করে ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।