ভোরের এক কাপ গরম চা ছাড়া বাঙালির ঘুম যেন ভাঙতেই চায় না। সকালে বারান্দায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া কিংবা কাজের ফাঁকে ক্লান্তি দূর করতে এক মগ চা— এটি এখন আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু আপনি যে চা পাতাটি পরম তৃপ্তিতে ব্যবহার করছেন, সেটি কি সম্পূর্ণ খাঁটি?
ভয়ঙ্কর তথ্য হলো, বাজারে বর্তমানে এমন অনেক চা পাতা পাওয়া যাচ্ছে যাতে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকারক কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক। এই ভেজাল চা দিনের পর দিন পান করলে আপনার লিভার, কিডনি ও পেটের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই, নিজের রান্নাঘরেই মাত্র ১ মিনিটে আপনি চিনে নিতে পারেন খাঁটি চা পাতা।
চা পাতার ভেজাল ধরার ৩টি ম্যাজিক টিপস:
১. টিস্যু পেপার টেস্ট (সবচেয়ে কার্যকর): একটি টিস্যু পেপারের ওপর দুই চামচ চা পাতা রাখুন। এবার পাতার ওপর কয়েক ফোঁটা জল ছিটিয়ে দিন। কিছুক্ষণ টিস্যু পেপারটি রোদে রাখুন। এরপর পাতাগুলো সরিয়ে ফেলুন। যদি টিস্যু পেপারের ওপর গাঢ় রঙের দাগ বা চিহ্ণ দেখা যায়, তবে বুঝবেন এতে ভেজাল রং মেশানো আছে। খাঁটি চা পাতা টিস্যুতে কোনো কড়া দাগ ফেলে না।
২. ঠান্ডা জলের পরীক্ষা: এক গ্লাস পরিষ্কার ঠান্ডা জল নিন। তাতে ১-২ চা চামচ চা পাতা দিয়ে ১ মিনিট অপেক্ষা করুন। আপনি অবাক হয়ে দেখবেন, যদি জল দ্রুত রঙিন হয়ে যায় তবে চা পাতাটি নিশ্চিতভাবে নকল বা রং মেশানো। কারণ, আসল চা পাতা কখনোই গরম জল ছাড়া এত দ্রুত রং ছড়ায় না।
৩. হাতের তালুর পরীক্ষা: সামান্য কিছু চা পাতা হাতের তালুতে নিয়ে ১-২ মিনিট ঘষুন। যদি আপনার হাত কালো বা বাদামী রঙে মেখে যায়, তবে বুঝবেন এতে রাসায়নিক রঙের প্রলেপ দেওয়া আছে। খাঁটি চা পাতা শুকনো অবস্থায় হাতে কোনো রং ছাড়ে না।
কেন সতর্ক হওয়া জরুরি?
ভেজাল চা পাতায় ব্যবহৃত কৃত্রিম রং এবং রাসায়নিক সরাসরি আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে আক্রমণ করে। দীর্ঘদিন এই চা পান করলে হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যানসারের মতো মারণ রোগও দানা বাঁধতে পারে। তাই সস্তা বা খোলা চা পাতা কেনার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।