দীর্ঘদিন ঘরের দেয়াল একই রঙের দেখতে দেখতে একঘেয়েমি লাগে। এছাড়া মাঝেমধ্যে ঘরের রঙের পরিবর্তন আনলে মনেরও পরিবর্তন ঘটে। তাছাড়া ঘরেও আসে নতুনত্ব।
তবে কেবল ঘরের দেয়াল যেকোনো রঙে রাঙালেই হবে না। ঘরের জন্য মানানসই রঙটিও বেছে নিতে হবে। এছাড়া অনেকেই মনে করেন ঘর রং করা দারুণ ঝামেলার কাজ। আসলে ব্যাপারটি তা নয়। ঘর রঙ করার আগে প্রয়োজনীয় কিছু টিপস জানা থাকলে এই কঠিন কাজটিও সহজ হয়ে যাবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক ঘর রং করার আগে যেসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি-
সবার আগে ঘর ফাঁকা করুন
রং করার আগে ঘর ফাঁকা করুন। ঘরের বড় আসবাবগুলোকে ঘরের মাঝখানে এনে পুরনো কাপড়, কাগজ বা প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখুন। এরপর রং করার আগে দেয়ালে কোনো খুঁত থাকলে তা ঠিক করা প্রয়োজন। আগের রং ঘষে তুলে ফেলতে হবে, সেইসঙ্গে দেয়ালে ছোট কিংবা বড় কোনো গর্ত থাকলে তাও ঠিক করতে হবে। আর রং করার আগে মেঝেও খবরের কাগজ বা প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকতে ভুলবেন না।
আগেই একটু পরীক্ষা করে নিন
আপনার ইচ্ছা হয়ত দেয়ালে সবুজ রঙ করবেন। এখন সবুজের তো নানা রঙের শেড। ঠিক কোন রঙটা আপনার ঘরে মানাবে সেটা নির্ভর করে ঘরের আকৃতি, আলোর অবস্থান ইত্যাদির উপর। সময় এবং টাকা দুই-ই খরচ করে পুরো ঘর রঙ করার পর আফসোস করার থেকে ভালো আগেই অল্প একটু জায়গা রঙ করে দেখা যে সেটা রাত কিংবা দিনে কেমন লাগছে আপনার ঘরের দেয়ালে। একদিন পর যদি মনে হয় সেটাই আপনার ঘরের জন্য উপযুক্ত তাহলে সেই রঙটাই রেখে দিন বা অন্য রং করে দেখুন। টেস্ট বা পরীক্ষামূলক হিসেবে একের অধিক রং-ও বাছাই করতে পারেন।
দেয়ালের রঙে জীবন রাঙান
সাদা আর ফিকে সাদার ঘেরাটোপে আর কত। এবার আসুন ঘরের দেয়ালের পাশাপাশি রঙিন করি নিজেদের জীবনও। তবে এই ব্যপারে আপনাকে একটু সতর্ক হতেই হবে। যেমন ঘর খুব ছোট হলে পুরো বাসা যদি কমলা বা বেগুনী রঙে রাঙান তাহলে ঘরের মাঝে একটা বদ্ধ ভাব আসবে। তাই চেষ্টা করুন মিলিয়েমিশিয়ে রং করতে। একটা দেয়াল পছন্দের রঙে রাঙাতে পারেন আর ঘরের উজ্জ্বল রং মিনিমাইজ করতে ঘরের পর্দা আর অন্যান্য আসবাব হালকা রাখতে পারেন। সবমিলিয়ে চাইলেই ঘরের দেয়ালের সঙ্গে সঙ্গে জীবনেও রং যোগ করুন। শুধু মাথায় রাখুন রঙের সঙ্গে আসবাব আর পর্দার রঙের সামঞ্জস্য যেন হয় একদম ঠিকঠাক।
প্রাইমারটাও জরুরি
প্রস্তুতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে প্রাইমিং। প্রাইমার দিলে দেয়ালের যত খুঁত আছে তা ঢাকা পড়ে ও দেয়ালকে রং বসার জন্য প্রস্তুত করে। বিশেষত দেয়ালের যত গর্ত বা ফাঁটল ঢাকার পরে প্রাইমার না দিলে চলেই না। আর প্রাইমারের পরে রং এক কোট দিলেও চলে। ফলে রঙের খরচও বেঁচে যায় অনেকটা।
রোলিং এর আগে ব্রাশ ব্যবহার করুন
দ্বিধায় না ভুগে সবসময়ই দেয়ালে রোলিং করার আগে ব্রাশ ব্যবহার করুন। বিশেষত মেঝে, ছাদ আর দেয়ালের কর্ণারসহ যেসব জায়গায় রোলার পৌঁছায় না সেসব জায়গায় আগে ব্রাশ ব্যবহার করাই ভালো। এতে করে দেয়ালের উপরিভাগ দেখতে মসৃণ লাগবে।
বাড়িতে যখন রঙের কাজ চলবে তখন চোখে সেফটি গ্লাস আর পুরনো কাপড় পরে থাকুন যাতে রঙের ছিটে না লাগে। সব প্রস্তুতি শেষ হলে বাড়ি রঙ করতে আর ভয় কিসের। আজই আসুন পরিকল্পনা করি বাড়িকে নতুন রঙে রাঙানোর।