গরম গরম খাবার খেতে ভালো লাগে, তাই অনেকেই খাবার ঠান্ডা করার জন্য তাতে ফুঁ দেন। কিন্তু এই অভ্যাসের কারণে কি খাবারে কোনো পরিবর্তন ঘটে বা শরীরের কোনো ক্ষতি হয়? বিজ্ঞান এই বিষয়ে কী বলে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
যখন আমরা কোনো গরম খাবার বা পানীয়তে ফুঁ দিই, তখন মুখ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) এবং জলীয় বাষ্প নির্গত হয়। কার্বন ডাই অক্সাইড ও জলের এই সংমিশ্রণ কার্বনিক অ্যাসিড (H2CO3) তৈরি করে, যা প্রকৃতিতে অম্লধর্মী। সাধারণত আমাদের শরীরের পিএইচ (pH) ৭.৩৫ থেকে ৭.৪৫-এর মধ্যে থাকে, যা সামান্য ক্ষারধর্মী। পিএইচ ৭-এর নিচে হলে তাকে অম্লধর্মী এবং ৭-এর উপরে হলে তাকে ক্ষারীয় বলা হয়।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গরম খাবারে ফুঁ দিলে তা কিছুটা অম্লধর্মী হলেও তা রক্তের পিএইচ পরিবর্তন করে না। কারণ রক্তের পিএইচ নিয়ন্ত্রণ করে প্রধানত দুটি অঙ্গ: ফুসফুস এবং কিডনি। ফুসফুস শরীর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে দেয় এবং কিডনি মূত্রের মাধ্যমে ক্ষতিকর অ্যাসিডিক যৌগগুলিকে নিষ্কাশন করে। তাই খাবারে ফুঁ দেওয়ার সরাসরি প্রভাব আমাদের শরীরের ওপর পড়ে না।
তবে এর সঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িয়ে আছে। ফুঁ দিলে মুখ থেকে জীবাণু বেরিয়ে খাবারে মিশে যেতে পারে। যদিও নিজের মুখের জীবাণু দিয়ে নিজের শরীরের কোনো বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম, কারণ খাবারের বেশিরভাগ জীবাণু মুখে এবং পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের দ্বারা ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু যদি একজন ব্যক্তির ফুঁ দেওয়া খাবার অন্য কোনো ব্যক্তি খায়, তাহলে তার শরীরের জীবাণু অন্যজনের শরীরে প্রবেশ করতে পারে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই অন্যের খাবারের ওপর ফুঁ দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।