কম খরচে স্বাদ, পুষ্টি ও সুষম আহারের খোঁজে ডিমের সঙ্গে পাল্লা দেয় এমন খাবার খুব কমই আছে। যদিও অনেকেই মনে করেন, ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল বাড়ে। তবে আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করেছে, এ ধারণা ভিত্তিহীন। বরং ডিমের কুসুম খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে।
তাইতো সুস্বাস্থ্যের জন্য ডিমের প্রতি নির্ভরশীল থাকেন অনেকেই। শরীরে পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি রূপচর্চার কাজেও উপকারী এই ডিম। তবে ডিম কেবল খাওয়া বা রূপচর্চাতেই কাজে লাগে না। আমাদের দৈনন্দিন নানা কাজে ডিম অনেকভাবে ব্যবহার করা যায়। চলুন জেনে নেয়া যাক ডিমের বিস্ময়কর সাত ব্যবহার সম্পর্কে-
রক্ত বন্ধ করতে
দুর্ঘটনাবশত কেটে গেলে দেখা যায় অনেক সময় রক্ত বন্ধ হতে চায় না। এ সময় ডিমকে কাজে লাগান। কম-বেশি প্রায় সবার বাড়িতে ডিম মজুত থাকে। কিংবা কোথাও পিকনিকে গেলে ডিম সিদ্ধ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া আমাদের বরাবরের অভ্যাস। সিদ্ধ ডিমের খোলা ও সাদা অংশের মাঝে যা পাতলা খোসা থাকে তা ছাড়িয়ে নিন। সেই খোসা ক্ষতস্থানে চেপে ধরে থাকলেই রক্ত বন্ধ হবে দ্রুত। এমনকি দ্রুত ক্ষতের দাগ মেলাতেও এটি বেশ কার্যকর।
জুতা পরিষ্কার করতে
পুরনো চামড়ার জুতার মধ্যে সাদা ঘোলাটে দাগ পড়ে যায়। ছত্রাকও জন্মাতে পারে। ডিমের সাদা অংশ কাপড়ে নিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করুন।
আঠা হিসেবে
বাড়িতে আঠা নেই? ময়দা, চিনি, ডিমের সাদা অংশ আর অল্প জল মিশিয়ে তৈরি করে নিন আঠা। এই আঠাই ব্যবহার করতে পারেন বিকল্প হিসেবে।
কন্ডিশনার
কন্ডিশনার ফুরিয়ে গেছে? চিন্তার কারণ নেই। অলিভ অয়েল আর ডিমের কুসুম একসঙ্গে মিশিয়ে শ্যাম্পুর পর লাগিয়ে রাখুন চুলে। বাজারচলতি কন্ডিশনারের চেয়ে এই ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারে চুল আরো ভালো হবে।
গাছের জন্য
ডিম সিদ্ধর পর সেই জল ও ডিমের খোলা গুঁড়িয়ে গাছের গোড়ায় দিন। ডিমের খোলা গাছের শরীরে ক্যালসিয়ামের জোগান বাড়াতে খুব কার্যকর। গাছকে নানা পতঙ্গের হাত থেকেও বাঁচায় ডিমের খোলা।
গয়না পরিষ্কার
রূপার গয়না কয়েকদিন পরলেই কালো হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। বাতাসে অক্সিজেনের প্রভাবেই এমনটা হয়। ডিম এই গয়নাগুলোকে পরিষ্কার করে ঝকঝকে করে দিতে পারে সহজেই। এক্ষেত্রে ডিম অনেকক্ষণ ধরে খুব শক্ত করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর খোসা ছাড়িয়ে দু’ভাগ করে কুসুম ছাড়িয়ে নিন। এবার সেই কুসুম একটি ঢাকনাযুক্ত পাত্রে রেখে হাত দিয়ে ঝুরঝুরে করে গুঁড়িয়ে নিন। এবার তাতে হালকা কোনো পেপার টাওয়াল বিছিয়ে তার উপর রাখুন রুপার গয়নাগুলো। পাত্রের মুখের চার পাশে ময়দার প্রলেপ লেপে বায়ুনিরুদ্ধ করে বন্ধ করে দিন। দু’দিন পর সেই গয়নাগুলো বার করলেই দেখবেন, কালো ভাব একেবারে উধাও। ডি-অক্সিডাইজার হিসেবে ডিমের এই ব্যবহার অন্যান্য গয়নাতেও করা হয়।