আজকাল কাজের চাপে বা সময়ের অভাবে অনেকেই স্বাস্থ্যকর খাবার-দাবারের নিয়ম মেনে চলতে পারেন না। হাতের কাছে যা পান, তাই দিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করে থাকেন। আর এই হুটহাট খাওয়া-দাওয়াই ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। কিন্তু এর সমাধান কী? চিন্তা নেই, সমাধান খুবই সহজ। বাইরে কিছু খাওয়ার আগে নিজেকে মাত্র চারটি প্রশ্ন করুন। এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দিতে পারলেই আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে আপনি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাচ্ছেন এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকছে।
১. আমার কি সত্যিই খিদে পেয়েছে?
এই প্রশ্নটি শুনতে অদ্ভুত লাগলেও, এটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। অনেক সময় আমরা যখন বিরক্ত হই, মানসিক চাপে থাকি, বা মন খারাপ থাকে, তখন সান্ত্বনা খুঁজতে খাবারের দিকে হাত বাড়াই। কিন্তু তখন হয়তো সত্যিই আমাদের খিদে পায় না। এমন পরিস্থিতিতে, প্রথমে এক গ্লাস জল পান করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। দেখবেন, খাওয়ার সেই তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনেকটাই কমে গেছে। শারীরিক খিদে আর মানসিক খিদে এক নয়, এটি বোঝা খুবই জরুরি।
২. এই খাবার কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?
প্লেটে খাবার তোলার আগে তার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন। ফাস্ট ফুডে সাধারণত কোনো পুষ্টি থাকে না বললেই চলে। চেষ্টা করুন এমন খাবার খেতে, যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এ, এবং পটাশিয়াম রয়েছে। টাটকা ফল, সবজি, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, ডাল বা চিকেন ব্রেস্ট বেছে নিতে পারেন। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যকর খাবার মানে শুধু কম ক্যালরি নয়, পর্যাপ্ত পুষ্টিও।
৩. খাবারের পরিমাণ ঠিক আছে তো?
খিদে পেলে আমরা প্রায়শই একটু বেশি খেয়ে ফেলি, আর এতেই হয় বিপত্তি। ডায়েট মানে শুধু কম ক্যালরি এবং পুষ্টিতে ভরপুর খাবার নয়, ডায়েট মানে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণও বটে। খাবার সময় বড় প্লেটে খাবার না নিয়ে ছোট প্লেট এবং বাটিতে সুন্দর করে খাবার সাজিয়ে খেতে বসুন। এতে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং আপনি অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন।
৪. খাবার কি আরও স্বাস্থ্যকর করা যায়?
ফাস্ট ফুড এবং জাঙ্ক ফুড থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকুন। মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারে বাদ দিন ডায়েট থেকে। অতিরিক্ত তেল, ঘি, মশলা দেওয়া খাবার যতই সুস্বাদু এবং বাড়িতে তৈরি হোক না কেন, তার থেকেও দূরে থাকাই ভালো। চেষ্টা করুন হালকা তেলে রান্না করা, কম মশলাযুক্ত এবং সেদ্ধ বা গ্রিলড খাবার খেতে। যদি বাইরে খেতে হয়, তবে সালাদ, স্যুপ বা গ্রিলড আইটেম বেছে নিন।
এই চারটি সহজ প্রশ্ন মেনে চললেই কাজের চাপে বা দ্রুততার মধ্যে খাওয়ার সময়ও আপনি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন এবং একটি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন। আপনার দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে এই ছোট পরিবর্তনগুলো এনে দেখুন, নিশ্চিতভাবে ভালো ফল পাবেন!