জীবনযাপনে এমন অনেক অভ্যাস-বদভ্যাস আছে যা নিজেরও যেমন পছন্দ নয়, অন্যদেরও নয়। তবে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে চলাফেরায় এমন অনেক ভুল ধারণা আছে মানুষের, যাতেও মিলে কোনো না কোনো উপকার। তা নিয়ে রিডার্স ডাইজেস্ট প্রকাশ করে একটি প্রতিবেদন।
ডিম খাওয়া
এককালে ধারণা করা হতো ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি ধূমপানের মতো হার্টের ক্ষতিও করে। কোলেস্টরলের কারণে এমনটা মনে করা হতো। ডিম খাওয়াকে খারাপ হিসেবেও দেখা হতো।
কিন্তু এক সময়ে এসে গবেষকেরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খাওয়া শরীরের জন্য ভালো। এমনকি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকেও বাঁচাতে সাহায্য করে এটি। এ ছাড়া ডিমে আছে প্রোটিন, কয়েক প্রকার ভিটামিন, ফসফোলিপিড এবং ক্যারোটিনয়েড।
পনিরের প্রতি প্রেম
পনিরে প্রচুর পরিমাণে চর্বি, কোলেস্টরল এবং সোডিয়াম থাকায় অনেক মানুষ এটি পরিহার করে থাকে। এরপরেও অনেককেই দেখবেন পনির প্রেমী।
একটি খাদ্যের পুষ্টিমান সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে মানুষের অনেক সময় লেগে যায়। ফলে এখন দেখা প্রকাশ পেয়েছে, পনিরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি ১২ আছে।
এমনকি এটি হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। রক্তচাপ বাড়ায় না। তবে ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিস হতে পারে। ফলে পনির একেবারেই পরিহার করতে হবে এমনটা নয়, এটি যথেষ্ট স্বাস্থ্য উপকারী জিনিসও।
খাবারের আগে নাশতা
অনেকে প্রধান খাবারের আগে ক্ষুধা নষ্ট হবে বলে কিছু খেতে চান না। কিন্তু হাতে যদি কিছুটা থাকে, সে ক্ষেত্রে হালকা নাশতা করে নিতে পারেন।
তবে সেই খাবারটি কি হতে পারে সেটি নিয়ে ডায়েটিশিয়ানদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। কারণ খালি পেটে হজম প্রক্রিয়া, ওজন এবং ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ে এ ব্যাপারে সতর্ক করে থাকেন অনেকে।
তবে হালকা কিছু খেয়ে নেওয়াটা উপকারী বলছেন তারা। এর ফলে প্রধান খাবারের ওপর চাপ কমবে। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে আপনাকে বিরত রাখবে এটি।
এতে চিনি বা লবণের মাত্রার দিকে খেয়াল রাখবেন। কোনো কিছুই যাতে অতিরিক্ত না হয়।
চুইংগাম চিবানো
মিষ্টি জিনিস অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। চিনি পরিহার করতে পারা সুস্বাস্থ্যের জন্য দারুণ সহায়ক। তবে একেবারেই পরিহার করা হয়তো সম্ভব নয়। এতেও যে কিছুটা উপকার নেই, তা কিন্তু নয়।
ধরুন মিষ্টি স্বাদের চুইংগাম। সারাক্ষণ চুইংগাম চিবানো অনেকের কাছে বিরক্তিকর ঠেকে। কার্ডিফ ইউনিভার্সিটিতে ব্রিটিশ গবেষকেরা দেখিয়েছেন, চুইংগাম চিবানো কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ায়। এ ছাড়া মানসিক চাপ কমায়। উত্তপ্ত মেজাজকে স্বাভাবিক করতে দারুণভাবে কাজ দেয় এটি।
সাপ্তাহিক ছুটিতে বেশি ঘুমানো
সারা সপ্তাহ পর্যাপ্ত ঘুমানোর সময় পান না অনেকে। ফলে ছুটির দিনগুলোতে সারা দিন ঘুমিয়ে সেটি পুষিয়ে নেন। এমনিতেই অনেকের অভ্যাস দিনের বেশি সময় ধরে ঘুমানো। এর ফলে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ সহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে বিশেষজ্ঞদের মত।
একটি সুইডিশ গবেষণায় জানা গেছে, ৬৫ কেজির কম ওজনের ব্যক্তিরা, যারা সারা সপ্তাহ কম ঘুমান এবং সাপ্তাহিক ছুটিতে বেশি ঘুমান। নিয়মিত সাত ঘণ্টা ঘুমানো ব্যক্তিদের মতোই অনুভূতি পান তারা। দিনের বেশির ভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটালেও শারীরিক সমস্যা হয় না। তবে বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য এটি সত্য না। এটি তাদের স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে।