উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার বর্তমানে একটি অতিপরিচিত শারীরিক সমস্যা। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করেন। তবে ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাসও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আমরা প্রতিদিন যা খাই, তার সরাসরি প্রভাব পড়ে আমাদের রক্তচাপের উপর। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। এই গবেষণার পর তাঁরা তিনটি সাধারণ খাবারের নাম উল্লেখ করেছেন, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হতে পারে বলে দাবি করেছেন। এই তিনটি খাবারই সহজে পাওয়া যায় এবং দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যোগ করা সম্ভব। এর মধ্যে একটি অবশ্য পানীয়।
ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজি নামক একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, নিয়মিত চা পান করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপকার পাওয়া যেতে পারে। চায়ে উপস্থিত কিছু উপাদান রক্তনালীকে প্রসারিত করতে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়াও, আঙুর খাওয়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। আঙুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য যৌগ রক্তচাপের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এই দুটি খাবারের পাশাপাশি গবেষকরা আরও একটি পছন্দের খাবারের কথা উল্লেখ করেছেন – ডার্ক চকোলেট। তাঁদের দাবি, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা চা পান এবং আঙুর খাওয়ার পাশাপাশি পরিমিত পরিমাণে ডার্ক চকোলেট খেলে উপকার পেতে পারেন। ডার্ক চকোলেটের ফ্ল্যাভানয়েড নামক উপাদান রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
গবেষকরা আরও মনে করছেন, আপেলও একইরকমভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রক্তবাহী নালী পরিষ্কার রাখতে এবং সেগুলির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
গবেষক দল স্বীকার করেছেন যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বহু ওষুধ বিদ্যমান। তবে যাঁরা সুস্বাদু খাবার উপভোগ করার পাশাপাশি নিজেদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে চান, তাঁরা এই খাবারগুলি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে দেখতে পারেন।
তবে এই বিষয়ে গবেষকদের স্পষ্ট পরামর্শ, যাঁরা ইতিমধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন এবং এই খাবারগুলি খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছেন, তাঁরা অবশ্যই এই খাবারগুলি গ্রহণ করার আগে তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। চিকিৎসকই তাঁদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন।