মুখের অবাঞ্ছিত লোম অনেক মেয়ের জন্যই একটি অস্বস্তিকর সমস্যা। মেকআপ সঠিকভাবে না বসা, ব্লেন্ডিংয়ে অসুবিধা কিংবা অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা – এমন অনেক কারণেই অনেকে এই লোম দূর করতে চান। সাধারণত ওয়াক্সিং বা লেজার ট্রিটমেন্টের মতো পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়, যা সাময়িক মুক্তি দিলেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে না, বরং অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। লেজার ট্রিটমেন্টে ত্বকে দাগ পড়তে পারে, আর ওয়াক্সিংয়ে লোমের গোড়া পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই, এক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন কিছু ঘরোয়া এবং নিরাপদ উপায়ে।
প্রাকৃতিক উপায়ে মুখের লোম দূর করার কৌশল
এখানে কিছু সহজলভ্য উপাদানের মাধ্যমে তৈরি কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি দেওয়া হলো:
১. পেঁপে ও হলুদের ব্যবহার:
পেঁপেতে থাকা ‘পাপাইন’ নামক উপাদান লোম তুলতে অত্যন্ত কার্যকরী। অন্যদিকে, হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে দ্রুত কাজ করে।
পদ্ধতি: প্রথমে পাকা পেঁপের খোসা ছাড়িয়ে কয়েক টুকরো কেটে হাত দিয়ে চটকে নিন। এরপর তার সঙ্গে আধা চা চামচ হলুদ মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে মেখে মিনিট দশেক অপেক্ষা করুন এবং তারপর ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
২. ডিম ও কর্ন স্টার্চের মিশ্রণ:
এটি ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে এবং অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে সাহায্য করে।
পদ্ধতি: এক চা চামচ কর্ন স্টার্চ ও একটি ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ধীরে ধীরে টেনে তুলুন। সামান্য ব্যথা লাগতে পারে, তবে এটি ত্বকে জমে থাকা মৃত কোষ ও লোম তুলতে দারুণ কাজ করবে।
৩. দুধ ও জেলোটিনের ব্যবহার:
ত্বকের লোম দূর করতে জেলোটিন দারুণ কার্যকর।
পদ্ধতি: প্রথমে এক টেবিল চামচ জেলোটিন ও তিন টেবিল চামচ দুধ নিন। এর সঙ্গে আধা চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণটি হালকা গরম করে নিন। ঠান্ডা হলে এটি একটু পুরু করে মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ধীরে ধীরে টেনে তুলুন। এতে মুখ পরিষ্কার হবে এবং ত্বকও সুন্দর ও মসৃণ থাকবে।
৪. লেবুর রস, মধু ও ওটস:
এই মিশ্রণটি মুখের লোম কমাতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়ক।
পদ্ধতি: এক চা চামচ লেবুর রস, দুই চা চামচ মধু ও এক চা চামচ ওটস নিন। সবগুলো উপাদান ভালোভাবে ব্লেন্ড করে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার সেটি পুরো মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এটি সপ্তাহে অন্তত দুইদিন ব্যবহার করলে দ্রুতই সমাধান মিলবে। মুখের লোম দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকও উজ্জ্বল থাকবে।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো নিয়মিত অনুসরণ করে আপনি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি ছাড়াই মুখের অবাঞ্ছিত লোম কমাতে পারবেন এবং ঝলমলে ত্বক ফিরে পাবেন।