কর্মক্ষেত্রে মাথা ঠান্ডা রাখা এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। তা না হলে একদিকে যেমন কাজের ক্ষতি হয়, তেমনই আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই অফিসের পরিবেশ হওয়া উচিত শান্ত ও মনোগ্রাহী। যেখানে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে, সেখানে শান্তির অভাব ঘটলে কাজের চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে এবং পেশার প্রতিও বিরক্তি আসতে পারে।
অফিসের জটিল রাজনীতি, উত্থান-পতন এবং কাজের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অনেককেই সহকর্মীদের বিরক্তিকর আচরণের সম্মুখীন হতে হয়। কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন মানসিকতার মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হয় বলে সকলের সঙ্গে মনের মিল নাও হতে পারে। তাই অল্পবিস্তর মানিয়ে নিতে হয়। তবে কোনো সহকর্মী যদি মাত্রাতিরিক্ত বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান, তবে তার সঙ্গে কিছু কৌশল অবলম্বন করে চলুন। এতে তিনিও বিরক্ত করার সুযোগ পাবেন না এবং আপনিও অপ্রয়োজনীয় বিতর্কে না জড়িয়ে শান্তভাবে কাজ করতে পারবেন।
১. ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন: মনে রাখবেন, অফিস কাজের জায়গা। কোনো বিরক্তিকর সহকর্মীর সঙ্গে আপনার সমস্যা নিয়ে অন্য সহকর্মীরা আপনার পক্ষ নিলেও বা তার সমালোচনা করলেও, এই অশান্তি বারবার হতে দেবেন না। এতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হয় এবং ধীরে ধীরে আপনিও হাস্যাস্পদ হয়ে ওঠেন। তাই প্রথম থেকেই এমন সহকর্মীর সামনে নিজের ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন, যাতে তিনি সহজে আপনার সঙ্গে কোনো বিতর্ক বা অকারণ ঝামেলায় জড়াতে না পারেন।
২. অপ্রয়োজনীয় আলোচনা এড়িয়ে চলুন: কাজের প্রয়োজন বা দরকারি কয়েকটি কথা ছাড়া এমন মানুষের সঙ্গে খুব বেশি অন্য আলোচনায় যাবেন না। তার বলা কোনো কথার উপর মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকুন। সাধারণত এই ধরনের লোকেরা এক কথার অন্য মানে বের করে সমস্যা তৈরি করেন।
৩. উপেক্ষা করুন: তার বলা কথা বা মন্তব্যে অকারণে উত্তেজিত হবেন না। বরং সেইসব কথাকে মজার ছলে নিয়ে বুঝিয়ে দিন যে আপনি সেগুলোকে কোনো গুরুত্ব দেননি। উপেক্ষা এই ধরনের মানুষকে জব্দ করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
৪. পদমর্যাদা বুঝে চলুন: যদি সেই ব্যক্তি আপনার চেয়ে উচ্চপদস্থ হন, তবুও তাকে ছাড় দেওয়া উচিত নয়। তবে এক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখুন। যে বিষয়গুলোতে তিনি আলোচনা করতে পছন্দ করেন বা যেগুলোতে তিনি বিরক্ত হন না, পারলে সেগুলো নিয়েই কথা বলুন। নিজের কাজে এমন কোনো ফাঁক রাখবেন না, যাতে তিনি বিরক্ত করার সুযোগ পান।
৫. মেজাজ ঠান্ডা রাখুন: যদি তার সঙ্গে কোনো বিষয়ে সমস্যা তৈরিও হয়, তবে মন শান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে অংশ নেবেন না। বরং সংযতভাবে তাকে জানান যে এই বিষয়ে কিছু পরে আপনি তার সঙ্গে আলোচনা করবেন।
৬. ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান: তবুও যদি এমন ব্যক্তির কারণে আপনার কাজের কোনো ক্ষতি হয়, তবে তাকে সে বিষয়ে অবগত করুন। এরপরও যদি তিনি তার অভ্যাস না বদলান, তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।
এই কৌশলগুলি অবলম্বন করে আপনি কর্মক্ষেত্রে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পারবেন এবং আপনার বিরক্তিকর সহকর্মীর নেতিবাচক প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।