আধুনিক জীবনে কাজের চাপ যত বাড়ছে, ঘাড়, কোমর ও পিঠের ব্যথা ততই সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করা, ভুল ভঙ্গিতে চলাফেরা এবং অন্যান্য কিছু ভুলের কারণে এই সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে। এই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে শুধু কাজের ধরন নয়, জীবনযাত্রাতেও কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে এই ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়।
কাজের চাপ সামলে ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়
১. দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস বদলান: যদি আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে বসে কাজ করতে হয়, তবে প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিন এবং হেঁটে আসুন। চিকিৎসকরা বলেন, একটানা বসে থাকলে শরীরের ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং ফ্যাট ঝরানোর উৎসেচকের কার্যকারিতা কমে যায়। এর ফলে শুধু ব্যথা বাড়ে না, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে।
২. সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখুন: ভুল ভঙ্গিতে বসা, দাঁড়ানো বা ঘুমানোর কারণে ঘাড় ও পিঠে ব্যথা হতে পারে। তাই সব সময় বসা, দাঁড়ানো বা শোওয়ার সময় আপনার ভঙ্গির দিকে খেয়াল রাখুন। শিরদাঁড়া যথাসম্ভব সোজা রাখার চেষ্টা করুন।
৩. ভারী ব্যাগ বহনের নিয়ম: ভারী ব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক বহনের সময় খেয়াল রাখুন যেন দুই কাঁধে সমান চাপ পড়ে। এক কাঁধে অতিরিক্ত ওজন নিলে ঘাড় ও পিঠে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
৪. সারভাইকাল কলার ও ব্যাক ব্রেস ব্যবহারে সতর্কতা: ফ্রোজেন শোল্ডার বা স্টিফ জয়েন্টের সমস্যায় সারভাইকাল কলার বা ব্যাক ব্রেস সাময়িক আরাম দিলেও, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এগুলোর ওপর নির্ভরশীল হওয়া থেকে বিরত থাকুন। ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করা বেশি উপকারী।
৫. বালিশের সঠিক ব্যবহার: ঘুমানোর সময় বালিশের উচ্চতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বালিশ খুব শক্ত বা খুব নরম হলে ঘাড় ও পিঠে ব্যথা হতে পারে। এমন উচ্চতার বালিশ ব্যবহার করুন যাতে আপনার কাঁধ ও ঘাড় বাঁকানো ছাড়াই পিঠ মোটামুটি সোজা থাকে।
এই সহজ পরিবর্তনগুলো দৈনন্দিন জীবনে আনলে ঘাড়, কোমর ও পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সুস্থ থাকতে কর্মজীবনের ব্যস্ততার মধ্যেও নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি।