রান্নায় লবণের সঠিক ব্যবহার খাবারের স্বাদ বাড়ায়, কিন্তু অনেকে আছেন যারা খাবারের সঙ্গে বাড়তি কাঁচা লবণ মিশিয়ে খান। চিকিৎসকরা এই অভ্যাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন, কারণ অতিরিক্ত লবণ শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত লবণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি:
লবণে মূলত সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, আমরা যে লবণ খাই তাতে সোডিয়ামের পরিমাণ অত্যধিক থাকে এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে, যা পরবর্তীতে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক সমস্যার কারণ হতে পারে। এছাড়াও, অতিরিক্ত লবণ শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি তৈরি করে, যার ফলে বয়সের আগেই হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।
অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার বিপদ:
শরীর ফুলে যাওয়া: যাদের অতিরিক্ত কাঁচা লবণ খাওয়ার অভ্যাস আছে, তাদের শরীরে জল জমা হওয়ার কারণে শরীর ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করলে পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
অন্যান্য সমস্যা: বেশি লবণ খেলে শরীরে জলের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
দৈনিক লবণের পরিমাণ:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সুপারিশ করে যে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। এটি এক চামচ লবণের সমান। আমাদের বেশিরভাগ মানুষই এই পরিমাণের চেয়ে বেশি লবণ গ্রহণ করে থাকেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
রেডি-টু-ইট খাবারের বিপদ:
আজকালকার ব্যস্ত জীবনে রেডি-টু-ইট বা প্যাকেটজাত খাবারের ব্যবহার বেড়েছে। তবে এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে লবণ মেশানো থাকে। রুটি, পনির, সংরক্ষিত মাংস এবং বিভিন্ন স্ন্যাকসে থাকা ৮০ শতাংশ লবণই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
অভ্যাস কমানোর উপায়:
যদি আপনার বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তবে হঠাৎ তা কমানোর চেষ্টা না করে ধীরে ধীরে পরিমাণ কমান। এতে শরীর নতুন অভ্যাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে। প্রথম দিকে একটু অস্বস্তিকর মনে হলেও, এক সপ্তাহের মধ্যে এই অভ্যাস পরিবর্তন করা সম্ভব। মনে রাখবেন, যত কম লবণ খাবেন, আপনার শরীর ততই সুস্থ থাকবে।