অতিরিক্ত খাওয়া কি আপনার নিত্যসঙ্গী? এই ৭ সহজ উপায়ে লাগাম টানুন, সুস্থ থাকুন!

মানসিক চাপ, একঘেয়েমি, এমনকি আবেগপ্রবণ মুহূর্তগুলো আমাদের অজান্তেই অতিরিক্ত খাওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। অনেকেই খাবারের প্রতি ভালোবাসার কারণেও লাগামহীনভাবে খেতে থাকেন। মাঝে মাঝে অতিরিক্ত খাওয়াটা স্বাভাবিক হলেও, এটি যখন নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়, তখন ওজন বৃদ্ধি এবং হজমসহ নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে এই অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা থেকে মুক্তি পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। জেনে নিন, কীভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন:

১. ছোট প্লেটে বড় কৌশল: এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক কৌশল। ছোট প্লেট বা বাটি ব্যবহার করলে মস্তিষ্ক ভাবে যে প্লেট ভর্তি খাবার খাচ্ছেন, ফলে মানসিক তৃপ্তি আসে। এটি খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রেখে আপনাকে সচেতনভাবে খেতে সাহায্য করবে, যার ফলে তুলনামূলকভাবে কম খাবার গ্রহণ করবেন।

২. প্রোটিন ও ফাইবারে ভরসা রাখুন: প্রোটিন এবং ফাইবার হজম হতে বেশি সময় নেয়, যা পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় মুরগি, মাছ, টফু, ডিম, ডাল জাতীয় চর্বিহীন প্রোটিন এবং শাক-সবজি, গোটা শস্য, বাদামের মতো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে অনিয়ন্ত্রিত ক্ষুধা কমবে।

৩. সচেতন হোন, বিকল্প খুঁজুন: অনেকে মানসিক চাপ, একঘেয়েমি, দুঃখ বা আনন্দের সময় ‘কমফোর্ট ফুড’ হিসেবে অতিরিক্ত খাবার খান। এই অভ্যাসটি চিহ্নিত করে তা ত্যাগ করা জরুরি। খাবারের পরিবর্তে ব্যায়াম, জার্নালিং, অথবা নিজের পছন্দের শখের কাজে মন দিন। এতে অযথা অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে আসবে।

৪. সঠিক পরিকল্পনা, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস: একটি সুপরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে সাহায্য করে। আগে থেকেই স্বাস্থ্যকর, পরিমিত খাবার প্রস্তুত করে রাখুন। অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে ফল, দই বা বাদামের মতো পুষ্টিকর খাবার হাতের কাছে রাখুন, যা আপনাকে হঠাৎ ক্ষুধার সময় সঠিক খাবার বেছে নিতে সাহায্য করবে।

৫. ২০ মিনিটের কৌশল প্রয়োগ করুন: মস্তিষ্ককে ‘পেট ভরে গেছে’ সংকেত পাঠাতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। যদি আপনার মনে হয় দ্বিতীয়বার খাবার নিতে হবে, তবে প্রায় ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। বেশিরভাগ সময়ই দেখবেন, ততক্ষণে পেট ভরে গেছে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

৬. কোনো বেলার খাবার বাদ দেবেন না: খাবার বাদ দিলে আপনার পরবর্তী খাবারে বেশি ক্ষুধার্ত হওয়ার এবং অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক সময়ে সুষম খাবার খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন। এটি বিপাক ক্রিয়াকেও সচল রাখে।

৭. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: ঘুমের অভাব হলে ক্ষুধা-নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনগুলির ভারসাম্য নষ্ট হয়, যার ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। সুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য প্রতি রাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা মানসম্মত ঘুম অপরিহার্য।

এই সহজ অথচ কার্যকরী টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন এবং একটি সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy