হেঁচকি একটি অতি পরিচিত এবং বেশ বিরক্তিকর শারীরিক প্রক্রিয়া। হঠাৎ করেই শুরু হতে পারে এই অনাকাঙ্ক্ষিত উপসর্গ এবং সহজে মুক্তি পাওয়াও বেশ কঠিন। ছোট থেকে বড়, প্রায় সকলেই কখনো না কখনো হেঁচকির অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। তবে কেন আমাদের হঠাৎ হেঁচকি ওঠে, তা কি আপনারা জানেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত কিছু বদঅভ্যাস বা শারীরিক পরিস্থিতির কারণে হেঁচকি দেখা দিতে পারে। দ্রুত খাবার গ্রহণ, অতিরিক্ত গরম বা মসলাদার খাবার খাওয়া, গরম খাবারের পরপরই ঠান্ডা জল পান করা অথবা দীর্ঘক্ষণ ধরে হাসি বা কান্নার ফলে হেঁচকি শুরু হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এখনও হেঁচকির সঠিক কারণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হলেও, একটি বহুল প্রচলিত ধারণা রয়েছে। আমাদের বুক ও পেটের মাঝে থাকা ডায়াফ্রাম নামক মাংসপেশির নিয়মিত সংকোচন ও প্রসারণ শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। কোনো কারণে এই স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত হলে এবং ডায়াফ্রাম হঠাৎ অনিয়মিতভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত হলেই হেঁচকি ওঠে।
ত্বক, লেজার ও এস্থেটিক বিশেষজ্ঞের মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে একটানা হেঁচকি হওয়ার পেছনে কিছু গুরুতর কারণ থাকতে পারে। সেগুলি হলো:
উদ্বেগ
কিডনির রোগ
শরীরে লবণের ভারসাম্যহীনতা
অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান
ফুসফুসের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া
মস্তিষ্কের টিউমার বা ফোড়া
অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ (প্যানক্রিয়াটাইটিস)
হেপাটাইটিস
হেঁচকি উঠলে কী করবেন?
সাধারণত, ক্ষণস্থায়ী হেঁচকি আপনাআপনিই সেরে যায়। তবে শারীরিক অসুস্থতা বা রোগের কারণে দীর্ঘস্থায়ী বা বারবার হেঁচকি দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাধারণ অবস্থায় হেঁচকি উঠলে কিছু সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে দেখতে পারেন:
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করলে অনেক সময় হেঁচকি কমে যায়। হাতের কাছে জল না থাকলে কিছুক্ষণ শ্বাস বন্ধ করে রাখুন।
ঠান্ডা জল বা বরফের কুচি ধীরে ধীরে গিললে অথবা শুকনো খাবার চিবিয়ে খেলে শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের চাপ বাড়ে, যা ডায়াফ্রামের অস্বাভাবিক সংকোচন থামাতে সাহায্য করে এবং হেঁচকি বন্ধ হয়।
যদি হেঁচকি অসহনীয় হয় এবং কিছুতেই না কমে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ বা ইনজেকশনের প্রয়োজন হতে পারে।
তাই, হঠাৎ হেঁচকি উঠলে আতঙ্কিত না হয়ে এই সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। তবে দীর্ঘস্থায়ী হেঁচকির ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।