একটি সম্পর্ককে সুন্দর বা অসুন্দর করার ক্ষমতা কিছু নির্দিষ্ট বাক্যের হাতেই থাকে। কিছু কথায় যেমন আমাদের মন ভরে ওঠে আনন্দে, তেমনি কিছু বাক্য হৃদয়কে চুরমার করে দিতে যথেষ্ট। যারা প্রেম বা বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ, তাদের জন্য কথা বলার সময় আরও বেশি সতর্ক থাকা জরুরি। এমন কোনো কথা বলা যাবে না যা আপনার সঙ্গীর জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আপনার অজান্তেই বলা একটি বাক্য হয়তো আপনার সম্পর্ককে ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। তাই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে এবং তাকে আরও সুন্দর করে তুলতে চাইলে, কথা বলার সময় হতে হবে আরও বেশি মনোযোগী ও যত্নশীল। এই প্রচেষ্টা দু’জনের দিক থেকেই থাকা প্রয়োজন। আর এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই কিছু কথা বলা থেকে আপনাদের বিরত থাকতে হবে।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক, কোন ৪টি বাক্য কখনোই আপনার সঙ্গীকে বলা যাবে না:
১. “তুমি খুব বোরিং!”
কেউই নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে চায় না। একজন মানুষ যতই অন্তর্মুখী বা একঘেয়ে হোক না কেন, সে আপনার কাছ থেকে কখনোই এই মন্তব্য শুনতে চাইবে না যে সে খুব বোরিং। একথা তাকে বলার অর্থ হলো মানসিকভাবে তাকে গভীরভাবে আঘাত করা। তাই এ ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন। বরং কেন সে চুপচাপ থাকছে বা প্রাণ খুলে কথা বলতে পারছে না, সে বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। সহজ সমাধানের জন্য এর বিকল্প নেই, কারণ এটি তাকে বুঝতে সাহায্য করবে।
২. “তুমি আমার কথা শোনো না কেন?”
এ ধরনের কথা হয়তো মাঝেমধ্যে অনুযোগের সুরে বলাই যায়। কিন্তু আপনি যদি সব সময়ই চান যে আপনার সঙ্গী আপনার সব কথা শুনে চলুক, তবে সেটি একটি ভুল ধারণা। এমনটা বললে তা আপনার সংকীর্ণ ও অত্যাচারী স্বভাবের প্রমাণ দেবে। সে আপনার সব কথা শুনতে বাধ্য নয়। একজন স্বাধীন মানুষ হিসেবে তার নিজস্ব মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গীকেও গ্রহণ করতে শিখুন। এতে সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হবে এবং সম্পর্ক আরও সুন্দর থাকবে।
৩. “তুমি খুব স্বার্থপর!”
প্রত্যেকেই প্রথমে নিজের স্বার্থ দেখবে, এটা স্বাভাবিক। তাই কথায় কথায় সঙ্গীকে স্বার্থপর বলা বন্ধ করুন। এ ধরনের কথা যদি ঝগড়ার মধ্যেও বলে ফেলেন, তবুও সেটি দীর্ঘস্থায়ী এক ক্ষত সৃষ্টি করে দিয়ে যাবে। যদি সে সত্যিই স্বার্থপর স্বভাবের হয়েই থাকে, তবে তার স্বার্থে আপনি যেসব ছাড় দিতেন, সেগুলো দেওয়া বন্ধ করে দিন। কিন্তু তাকে সরাসরি স্বার্থপর আখ্যায়িত করে অকারণে সম্পর্ক তিক্ত করতে যাবেন না, কারণ এটি সম্পর্কের তিক্ততা বাড়াবেই।
৪. “তুমি অনেক বদলে গেছো!”
পৃথিবীর সবকিছুই পরিবর্তনশীল। কোনো কিছুই চিরকাল একইভাবে বয়ে চলে না। নিজের দিকেই খেয়াল করুন, আপনি কি সব সময়েই একই রকম থাকছেন? তাই একটু একটু করে বদলে যাওয়াকে অস্বাভাবিক ধরে নেবেন না। ভালোবাসা পরিমাপের কোনো যন্ত্র নেই, এটি বেশি-কম হতেই পারে। তার বদলে যাওয়া যদি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, তবে সেই পরিবর্তনকে ইতিবাচকভাবে মেনে নিন। বরং তাকে জিজ্ঞাসা করুন কেন এই পরিবর্তন, তার মনের কথা জানার চেষ্টা করুন।
শেষ কথা:
সম্পর্কে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সহানুভূতি অত্যন্ত জরুরি। এমন শব্দ ব্যবহার করুন যা ভালোবাসাকে শক্তিশালী করে, ভাঙন সৃষ্টি করে না। আপনার বলা কথাগুলোই আপনার সম্পর্কের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। তাই প্রতিটি শব্দ ব্যবহার করুন যত্ন সহকারে।