ধূমপান যে ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ, সে কথা আজ আর নতুন কিছু নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা যা বলছে, তা পুরুষদের জন্য এক চরম সতর্কবার্তা নিয়ে এসেছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ধূমপানের কুপ্রভাব কেবল ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি পুরুষদের গোপনাঙ্গকেও স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা যৌন স্বাস্থ্য ও আত্মবিশ্বাসের ওপর সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
গবেষণায় যা উঠে এসেছে:
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপান সরাসরি ‘লিঙ্গ শিথিলতা’ (Erectile Dysfunction) বা পুরুষত্বহীনতার মতো গুরুতর সমস্যার কারণ হতে পারে। আরও উদ্বেগজনক তথ্য হলো, দীর্ঘ দিন ধরে ধূমপান চালিয়ে গেলে লিঙ্গের দৈর্ঘ্য স্থায়ীভাবে কমে যেতে পারে। এটি পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এক চরম আঘাত, যা মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত করতে পারে।
কিন্তু কেন এমন হয়? বিজ্ঞানীরা কী বলছেন?
যৌন উত্তেজনার সময় লিঙ্গের দৃঢ়তা মূলত লিঙ্গে পর্যাপ্ত রক্তসঞ্চালনের ওপর নির্ভরশীল। গবেষকদের দাবি, ধূমপানের ফলে রক্তনালীর ভেতর বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান যেমন চর্বি, কোলেস্টেরল ইত্যাদি জমা হতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘আর্থেরোস্ক্লেরোসিস’ (Atherosclerosis) বলা হয়। আর্থেরোস্ক্লেরোসিস যেমন স্ট্রোক বা হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনই এর ফলে লিঙ্গে রক্তসঞ্চালন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। যখন পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছাতে পারে না, তখন লিঙ্গ সঠিকভাবে দৃঢ় হতে পারে না।
এছাড়াও, সিগারেটে থাকা প্রধান আসক্তিকর উপাদান নিকোটিন রক্তনালীগুলোর গহ্বরকে সংকুচিত করে। রক্তনালী সরু হয়ে যাওয়ায় রক্তপ্রবাহ আরও কমে যায়, যা লিঙ্গের স্বাভাবিক কার্যকারিতাকে ব্যাহত করে। যেহেতু রক্তনালীর এই ক্ষতি একবার হলে তা প্রায় স্থায়ী, তাই লিঙ্গের দৈর্ঘ্য হ্রাস পাওয়ার সমস্যাটিও স্থায়ী রূপ নিতে পারে।
সংক্ষেপে, ধূমপান রক্তনালীগুলোকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়, যা শুধু হৃদপিণ্ড বা ফুসফুস নয়, শরীরের প্রতিটি অঙ্গে রক্ত সরবরাহকে প্রভাবিত করে। লিঙ্গের রক্তনালীগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট হওয়ায়, সেগুলি দ্রুত এবং মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই গবেষণা পুরুষদের জন্য এক কড়া বার্তা দিচ্ছে। ক্যানসারের ভয়াবহতার পাশাপাশি, ধূমপান কিভাবে ব্যক্তিগত জীবনের এক অত্যন্ত সংবেদনশীল দিককে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তা এখন আরও স্পষ্ট। সুস্থ জীবন এবং সুস্থ যৌন স্বাস্থ্যের জন্য ধূমপান ত্যাগ করা অপরিহার্য।