জল বিশুদ্ধকরণে ফিটকিরির ব্যবহার আমাদের সবারই জানা। বাড়িতে যখন জল শুদ্ধ করার যন্ত্র খারাপ হয়ে যায়, তখন ফিটকিরিই হয়ে ওঠে ভরসা। জলে ফিটকিরি ফেললে অনেক ক্ষতিকর জীবাণু দূর হয়। কিন্তু জানেন কি, এই সহজলভ্য ফিটকিরি আপনার রোজকার জীবনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগতে পারে? জেনে নিন এর ৫টি অপ্রত্যাশিত ব্যবহার:
১. মুখের ঘা নিরাময়ে:
মুখের ভেতরে কোনো ঘা হলে তাতে ফিটকিরি গুঁড়ো লাগাতে পারেন। প্রথমদিকে সামান্য জ্বালা করবে, কিন্তু দ্রুত ঘা শুকিয়ে যাবে। মনে রাখবেন, লালারস গিলে ফেলবেন না এবং এই টোটকা ছোটদের ওপর প্রয়োগ না করাই ভালো।
২. মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে:
যাদের মুখে ব্যাকটেরিয়ার আধিক্যের কারণে দুর্গন্ধের সমস্যা হয়, তাদের জন্য ফিটকিরি দারুণ কার্যকর হতে পারে। ফিটকিরি ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সক্ষম। তাই সামান্য লবণ জলে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। জল ঠাণ্ডা হলে তাতে ফিটকিরি গুঁড়ো মিশিয়ে একটি বোতলে ভরে রাখুন। নিয়মিত এই জল দিয়ে কুলি করলে মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
৩. উকুনের সমস্যায় কার্যকরী:
বাচ্চাদের মাথায় উকুন হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে এবং উকুন মরে গেলেও ডিমগুলো দীর্ঘদিন থেকে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ফিটকিরি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। জলে ফিটকিরি গুঁড়ো এবং টি-ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিন। এই জল ১০ মিনিট মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন, তারপর শ্যাম্পু করে নিন। এটি উকুন ও উকুনের ডিম দূর করতে সাহায্য করবে।
৪. শেভিংয়ের পর এবং অ্যাকনের চিকিৎসায়:
দাঁড়ি কাটতে গিয়ে হঠাৎ গাল কেটে গেলে চিন্তার কিছু নেই। কাটা জায়গায় ফিটকিরি লাগিয়ে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে কোনো রকম সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে না। এছাড়াও, অ্যাকনের সমস্যায় একটি দারুণ ফেস প্যাক তৈরি করতে পারেন: ১ চামচ মুলতানি মাটি, ২ চামচ ডিমের সাদা অংশ এবং ১ চামচ ফিটকিরি গুঁড়ো মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। অ্যাকনের সমস্যা বাড়লে এটি মুখে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। অ্যাকনের লালচে ভাব, ফোলা ভাব এবং ব্যথা কমে যাবে।
৫. অতিরিক্ত ঘাম ও দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে:
অতিরিক্ত ঘাম বা ঘামের দুর্গন্ধের সমস্যায় ফিটকিরি ডিওড্র্যান্টের মতো কাজ করে। এটি ঘাম নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। স্নানের পর বগল বা ঘাম প্রবণ স্থানে সামান্য ভেজা ফিটকিরি ঘষে নিলে সারাদিন সতেজ থাকতে পারবেন।
সুতরাং, ফিটকিরি কেবল জল বিশুদ্ধকারী হিসেবে নয়, আপনার দৈনন্দিন জীবনে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেও এক দারুণ প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।