রান্নাঘরের এক অতি প্রয়োজনীয় উপাদান হলো পেঁয়াজ। এর ঝাঁঝালো স্বাদ খাবারের স্বাদ বাড়াতে যেমন অতুলনীয়, তেমনই কাঁচা পেঁয়াজেরও রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। এটি শুধু খাবারের স্বাদ ও রং যোগ করে না, বরং অসংখ্য পুষ্টিগুণে ভরপুর যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন মৌসুমী সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের গুণাগুণ সম্পর্কে পুষ্টিবিদরা বলেন, ফ্ল্যাভোনয়েড নামক উদ্ভিজ্জ যৌগ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ এই সবজিটি। নিয়মিত পেঁয়াজ খেলে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং এটি কিছু বিশেষ ধরণের ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। একটি মাঝারি আকারের পেঁয়াজে মাত্র ৪৪ ক্যালোরি থাকে এবং এটি ভিটামিন সি-এর চমৎকার উৎস। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেঁয়াজ যোগ করা অপরিহার্য।
গরমকালে পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা জানান, গরমের সময় পেঁয়াজ খাওয়া শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। সর্দি-কাশির নিরাময়ে পেঁয়াজের ব্যবহার বহু প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত। গ্রীষ্মকালে তাই খাদ্যতালিকায় পেঁয়াজ অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। এই সময়ে সর্দি-কাশির সমস্যা হলে পেঁয়াজ দ্রুত উপশম দিতে পারে।
পেঁয়াজে রয়েছে শক্তিশালী রাসায়নিক উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং আমাদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। পেঁয়াজ বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে অথবা সালাদের সাথে কাঁচা খাওয়া যেতে পারে। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য পেঁয়াজ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
তীব্র গরমে হিটস্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যা থেকে রক্ষা করতেও পেঁয়াজ সহায়ক হতে পারে। পেঁয়াজে থাকা বিশেষ উপাদানগুলি প্রখর রোদে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তাই গরমের সময় হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত খাবারের সাথে পেঁয়াজ যোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
পেঁয়াজ ভিটামিন, খনিজ এবং উদ্ভিজ্জ রাসায়নিকের একটি চমৎকার উৎস। এই উপাদানগুলি বিভিন্ন উপায়ে আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। শুধু তাই নয়, হৃদরোগ, মাথাব্যথা এবং মুখের আলসারের মতো সমস্যাতেও পেঁয়াজ উপকারী। এছাড়াও, পেঁয়াজে কোয়ারসেটিন নামক একটি উপাদান থাকে যা গরমকালে হওয়া ঘামাচি থেকেও আমাদের রক্ষা করতে পারে।
সুতরাং, রান্নার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের সুরক্ষায়ও পেঁয়াজের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়মিত পেঁয়াজ খান এবং সুস্থ থাকুন।