মানব শরীরে বেশিরভাগ রোগের সূত্রপাত হয় রক্ত থেকেই। রক্ত দূষিত হলে বা রক্তে জীবাণু প্রবেশ করলে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, রক্ত পরিশুদ্ধ থাকলে বহু রোগ দূরে থাকে।
যদি আপনি রক্ত পরিশুদ্ধ করার উপায় খুঁজে থাকেন, তাহলে কিছুদিন চিরায়তার জল পান করতে পারেন। চিরায়তার জল তেতো হলেও, এর সামান্য পরিমাণ সেবনও শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। এটি রক্ত পরিষ্কার করে অনেক রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, পাশাপাশি আরও কিছু স্বাস্থ্য বেনিফিটও প্রদান করে।
রক্ত পরিশোধক হিসাবে চিরায়তা:
আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, চিরায়তার জল পান করলে পুরো শরীরের রক্ত বিশুদ্ধ হয়। রক্ত পরিষ্কার থাকলে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। চিরায়তা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক গুণে সমৃদ্ধ, যা রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়ক। এটি রক্তাল্পতা নিরাময়েও সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী:
চিরায়তা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। WebMD-এর তথ্য অনুসারে, এতে আমারোজেন্টিন নামক একটি বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ রয়েছে, যা অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এর ফলে প্যানক্রিয়াসের বিটা কোষ সক্রিয় হয় এবং ইনসুলিন তৈরি হয়।
ত্বকের যত্নে চিরায়তা:
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চাইলে মাঝে মাঝে চিরায়তার জল পান করতে পারেন। ২-৩ মাস পর কিছুদিন চিরায়তার জল পান করলে ত্বকের অনেক সমস্যা এমনিতেই সেরে যায়। এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বকের অভ্যন্তরে প্রদাহ হতে দেয় না। চিরায়তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে পরিষ্কার ও সুন্দর করে তোলে। এটি র্যাশ, চুলকানি, ফোলাভাব, জ্বালা, লালচে ভাব এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।
লিভারের জন্য উপকারী:
শরীরে প্রবেশ করা বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ লিভার প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে নিষ্কাশিত করে। এর ফলে লিভারের উপর চাপ পড়ে এবং কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। চিরায়তা লিভারে জমে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ পরিষ্কার করে এবং লিভার কোষের পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক গুণ:
চিরায়তা পেটে থাকা ক্ষতিকর প্যারাসাইট বা কৃমি ধ্বংস করতে সহায়ক। এটি মূলত পেটের গণ্ডগোল বা গলা ব্যথার সমস্যাও নিরাময় করে। এর অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক বৈশিষ্ট্য পেটের ক্ষতিকর কৃমি মেরে ফেলে। তবে মনে রাখতে হবে, চিরায়তা সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করাই শ্রেয়।
সতর্কতা: এই প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।