ম্যাগনেসিয়াম একটি অপরিহার্য খনিজ এবং ইলেকট্রলাইট, যা অনেক শারীরিক প্রক্রিয়া সাধনে ভূমিকা পালন করে। এসব শারীরিক প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে : শক্তি উৎপাদন, হাড় এবং দাঁতের গঠন, পেশি ও স্নায়ুর ফাংশন, ডিএনএ রেপ্লিকেশন, আরএনএ, প্রোটিন সংশ্লেষণ ইত্যাদি।
ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবার কম গ্রহণ, বংশগত বিভিন্ন অসুখ, মদ্যপান, ডায়াবেটিস—এ ছাড়াও কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ার ফলে দেহে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এর ফলে দেহে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যেসব সমস্যা হয়
দেহে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হলে পেশিতে ঝাঁকুনি, কাঁপুনি এবং ক্র্যাম্প দেখা দিতে পারে। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে স্নায়ুর কার্যকারিতা কমতে পারে এবং কিছু কিছু লোকের ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থাকে ঝুঁকিগ্রস্ত করে ফেলতে পারে।
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে অস্টিওপরোসিস হতে পারে। এর ঘাটতি সরাসরি হাড়কে দুর্বল করতে পারে, তবে এটি রক্তে হাড় গঠনের অন্যতম উপাদান ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে পারে।
ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতির আরেকটি জটিলতা হলো পেশির দুর্বলতা, যা মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস দ্বারা সৃষ্ট হতে পারে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে উচ্চ রক্তচাপজনিত জটিলতাও দেখা দিতে পারে।
ম্যাগনেসিয়ামের উৎস
♦ গম
♦ ভুট্টা
♦ শস্য দানা
♦ বাদাম
♦ মিষ্টিকুমড়ার বিচি
♦ ডার্ক চকোলেট
♦ ফ্ল্যাক্সসিড
♦ চিয়াসিড
♦ ডাল
♦ মটর
♦ মাংস
ওপরের উল্লেখিত সব খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এ ছাড়া গুড়, কফি, খেজুরও ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস।
ঘাটতি পূরণে করণীয়
শরীরে কতটা ম্যাগনেসিয়াম শোষিত হবে, তা বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান ও বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। যাদের শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি আছে, তাদের অবশ্যই ঘাটতি পূরণে ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবার গ্রহণের পাশাপাশি বেশ কিছু নিয়মও মেনে চলতে হবে।
♦ ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে বা পরে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার না খেলে বা এড়িয়ে চললে শরীরে ম্যাগনেসিয়াম ভালো কাজে লাগে।
♦ কিছু স্টাডিতে উঠে এসেছে, উচ্চ ডোজের জিংক সাপ্লিমেন্ট খেলে ম্যাগনেসিয়াম শোষণে বাধা প্রদান করে।
♦ শরীরে ভিটামিন ‘ডি’-এর অভাব থাকলে সেগুলো ম্যাগনেসিয়ামের সঠিক কাজে বাধা দেয়, সে জন্য ভিটামিন ‘ডি’-এর ঘাটতি পূরণ করে নিতে হবে ম্যাগনেসিয়ামের কার্যকারিতা বাড়াতে।
♦ ধূমপান ত্যাগ করতে হবে, অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে দেহে ম্যাগনেসিয়াম শোষণ বাধাপ্রাপ্ত হয়।bs