মাসিকের যত্নে কিছু জরুরি কথা: সুস্থ থাকতে জানুন করণীয়

প্রতিটি নারীর জীবনে পিরিয়ড বা মাসিকচক্র একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। প্রতি মাসে সঠিক সময়ে মাসিক শুরু হওয়ার মাধ্যমে নারীর শারীরিক সুস্থতাও নিশ্চিত হয়। সাধারণত একটি মেয়ের ১২-১৩ বছর বয়সে মাসিক শুরু হয় এবং প্রায় ৫২ বছর বা তার কাছাকাছি বয়সে গিয়ে মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। মাসিকের সময় কীভাবে নিজের যত্ন নেবেন এবং কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন, তা জেনে নিন।

মাসিকের সময় নিজের যত্ন নেবেন যেভাবে
মাসিকের সময় নিজের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিছু সহজ টিপস মেনে চললে এই সময়ে অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়:

মানসিক সহায়তা: পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের মাসিকচক্রের বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে এবং এই সময় তাঁদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে পর্যাপ্ত সাহচর্য দিতে হবে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম: মাসিক চলাকালীন রাত জাগবেন না। এতে শরীর আরও ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে এবং ঋতুস্রাবজনিত অস্বস্তিও বাড়তে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবার: এই সময়ে স্বাস্থ্যকর খাবার বিশেষ করে মৌসুমি ফল, সবজি, ডিম খেতে পারেন। পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন ভাজাপোড়া, তেল-চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
কিছু খাবার এড়িয়ে চলুন: এই সময় দই, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকসহ কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, অতিরিক্ত কফি খাবেন না, কারণ উচ্চ মাত্রার ক্যাফেইন পেটে ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার: স্যানিটারি প্যাড ছাড়া ঘুমাবেন না। যদি প্যাড পরে শুতে অস্বস্তি হয়, তাহলে আরামদায়ক প্যাড ব্যবহার করুন।
শরীরচর্চা চালিয়ে যান: মাসিকের কারণে শরীরচর্চা বন্ধ করবেন না। বরং, মাসিকের সময় শরীরচর্চা করলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
খালি পেটে থাকবেন না: এই সময়ে দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকবেন না। যেহেতু মাসিকের সময় শরীর থেকে বেশ খানিকটা রক্ত বেরিয়ে যায়, তাই এই সময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি?
কিছু লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত:

অনিয়মিত মাসিক: যদি আপনার মাসিক চক্রের সময় বা পরিমাণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ: মাসিকের সময় যদি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়, যা সাধারণের চেয়ে বেশি বলে মনে হয়।
তীব্র ও অসহনীয় পেটে ব্যথা: মাসিকের সময় যদি তীব্র এবং অসহনীয় পেটে ব্যথা অনুভব করেন, যা স্বাভাবিক ব্যথানাশক দিয়েও কমে না।
অস্বাভাবিক জ্বর ও দুর্বলতা: মাসিকের সময় যদি অস্বাভাবিক জ্বর আসে এবং খুব বেশি দুর্বলতা অনুভূত হয়।
উপসংহার:
মনে রাখতে হবে, প্রতিটি নারীর জীবনে মাতৃত্বে পূর্ণতা আসে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে গর্ভাবস্থার পুরো সময়টা উপভোগ করুন। অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন এবং নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হোন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy