পিরিয়ডকালীন স্বাস্থ্যবিধি, অসতর্কতায় বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা

পিরিয়ড চলাকালীন নারীদের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন একটি সাধারণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, তবে এই সময়ে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। সামান্য অসাবধানতাও গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি, এমনকি ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগের কারণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সময়ে নিজেদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলা অপরিহার্য।

অপরিচ্ছন্নতার ঝুঁকি: ক্যান্সারের সম্ভাবনা!
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিরিয়ডের সময় সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকা, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ না করা এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে না চলা বড় ধরনের অসুখের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এমনকি এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যদিও বর্তমান সময়ে নারীরা আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন এবং নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হচ্ছেন, তবুও কিছু বিষয়ে অসতর্কতা গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয়টি হলো, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ন্যাপকিন পরিবর্তন না করার অভ্যাস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয় এবং এই ধরনের অভ্যাস থেকে নারীর শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে। সেইসঙ্গে দেখা দিতে পারে গুরুতর আরও অনেক সমস্যা।

কোন ভুলগুলো এড়িয়ে চলবেন?
১. এক ন্যাপকিনে দীর্ঘ সময় নয়: পিরিয়ডের সময় দীর্ঘক্ষণ ধরে একটি ন্যাপকিন পরে থাকা অত্যন্ত ক্ষতিকর। যারা ন্যাপকিন ব্যবহার করেন, তাদের উচিত প্রতি ছয় ঘণ্টা পর পর সেটি পরিবর্তন করা। এই অভ্যাসের ব্যতিক্রম হলে তা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

২. ট্যাম্পন ব্যবহারে সতর্কতা: যারা ট্যাম্পন ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রেও সময়সীমা মেনে চলা জরুরি। কোনোভাবেই আট ঘণ্টার বেশি ট্যাম্পন ব্যবহার করা উচিত নয়। দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে টক্সিক শক সিন্ড্রোমের মতো গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৩. মেনস্ট্রুয়াল কাপ পরিষ্কার ও সময়সীমা: মেনস্ট্রুয়াল কাপের ব্যবহার এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যারা এটি ব্যবহার করেন, তাদের উচিত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে এটি পরিবর্তন করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রতিবার ব্যবহারের পর মেনস্ট্রুয়াল কাপ ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে পরিষ্কার করে নেওয়া। অন্যথায় স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকেই যাবে।

৪. শরীরের ব্যক্তিগত অংশের পরিচ্ছন্নতা: পিরিয়ডের সময় শরীরের ব্যক্তিগত অংশ পরিচ্ছন্ন রাখা সবচেয়ে জরুরি। পরিষ্কার জল বা প্রয়োজনে হালকা গরম জল ব্যবহার করে এই অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিত। অপরিচ্ছন্নতার কারণে এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও অসুখ দেখা দিতে পারে।

৫. সুগন্ধিযুক্ত পণ্য পরিহার: পিরিয়ড চলাকালীন ব্যক্তিগত অংশে অতিরিক্ত সুগন্ধিযুক্ত পণ্য বা ক্ষার জাতীয় কোনো কিছু ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এই ধরনের পণ্য যোনিপথের প্রাকৃতিক pH ভারসাম্য নষ্ট করে সংক্রমণ এবং অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলেছেন যে, পিরিয়ডকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রত্যেক নারীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামান্য সচেতনতা এবং সঠিক অভ্যাস মেনে চললে অনেক গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy