জন্ডিস একটি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা, যা ছোট-বড় অনেকেই ভুগে থাকেন। আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মনে হলেও, সময়মতো চিকিৎসা না করালে এটি গুরুতর রূপ নিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা ভাঙার ফলে বিলিরুবিন তৈরি হয়, যা হলুদ রঙের।
রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে ত্বক, শ্লেষ্মা ঝিল্লি এবং চোখের সাদা অংশে হলুদাভ আভা দেখা যায়। এমনকি প্রস্রাবের রংও হলুদ হতে পারে। জন্ডিস প্রায়শই লিভার বা পিত্তনালীর বিভিন্ন সমস্যার সাথে যুক্ত থাকে।
জন্ডিসের রোগীরা সাধারণত ক্লান্তি, পেটে ব্যথা, ওজন হ্রাস, বমি এবং জ্বরের মতো উপসর্গে ভুগতে পারেন। শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে জন্ডিসের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। এছাড়াও, যারা আগে থেকেই লিভারের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
জন্ডিসের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি প্রচলিত থাকলেও, কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ভারতের ন্যাশনাল হেলথ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন গাছের পাতা ব্যবহার করে জন্ডিসের চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং এই পাতাগুলো লিভারকেও সুস্থ রাখতে সহায়ক। জেনে নিন জন্ডিস নিরাময়ে কার্যকরী ৫টি পাতা সম্পর্কে:
১. অড়হর পাতা: অড়হর পাতা পিষে তার রস বের করে প্রতিদিন ৬০ মিলি করে খেলে জন্ডিস দ্রুত সেরে যায়। এটি একটি সহজলভ্য এবং কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি।
২. করলা পাতা: করলা পাতাও জন্ডিসের চিকিৎসায় বেশ উপকারী। ৭-১০টি করলা পাতা এক কাপ জলে ফুটিয়ে নিন এবং জল ঠান্ডা হতে দিন। এই জল দিনে অন্তত তিনবার পান করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
৩. মূলার পাতা: জন্ডিসের চিকিৎসায় মূলার পাতাও একটি ঐতিহ্যবাহী remedy। মূলার পাতা বেটে তার রস বের করে খেলেই রোগী জন্ডিসের কবল থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
৪. পেঁপে পাতা: পেঁপে পাতাও জন্ডিস নিরাময়ে সহায়ক। ন্যাশনাল হেলথ পোর্টালের তথ্য অনুসারে, এক চা চামচ পেঁপে পাতা বাটার সাথে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে এক বা দুই সপ্তাহ নিয়মিত খেলে এটি জন্ডিসের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি ঘরোয়া প্রতিকার।
৫. তুলসি পাতা: তুলসি পাতা তার ঔষধি গুণের জন্য সুপরিচিত এবং জন্ডিসের চিকিৎসায়ও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। ১০-১৫টি তুলসি পাতা বেটে নিন এবং আধা গ্লাস মূলার রসের সাথে মিশিয়ে ২-৩ সপ্তাহ পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
জন্ডিসের সমস্যায় ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করার পাশাপাশি অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক রোগ নির্ণয় এবং প্রয়োজনে আধুনিক চিকিৎসার সাহায্য নেওয়াও জরুরি। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ব্যবহার করে অনেকেই উপকার পেতে পারেন।