পেঁপে পুষ্টিকর ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে ভরপুর এক ফল হলো পেঁপে। বছরের বেশিরভাগ সময়েই পাওয়া যায় এই ফল।
ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ওজন কমানো থেকে শুরু করে শারীরিক নানা ব্যাধি থেকে মুক্তি মেলে নিয়মিত পেঁপে খেলে।
এমনকি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, নিম্ন রক্তচাপেরও ঝুঁকি কমে। যদিও পেঁপে অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ফল, তবে সবার জন্য এটি খাওয়া নিরাপদ নয়।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে-
গর্ভবতী নারীরা
শিশুর বৃদ্ধি ও গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। তবে গর্ভকালীন খাদ্যতালিকা থেকে বাদ পেঁপে দেওয়া উচিত।
এই ফলে ল্যাটেক্স থাকে, যা জরায়ু সংকোচনে ভূমিকা রাখে। ফলে গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।বিশেষ করে আধা পাকা পেঁপে খাওয়া এক্ষেত্রে বিপদের কারণ হতে পারে।
হৃদরোগে যারা ভুগছেন
পেঁপে খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমতে পারে, তবে আপনি যদি এরই মধ্যে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন, তাহলে অবশ্যই এড়িয়ে চলুন পেঁপে।
এক গবেষণার তথ্য অনুসারে, পেঁপেতে অল্প পরিমাণে সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড থাকে। এটি হলো এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড।
যা মানুষের পাচনতন্ত্রে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে। যদিও উৎপাদিত যৌগের পরিমাণ স্বাস্থ্যের জন্য ততটা ক্ষতিকর নয়।
তবে এর অতিরিক্ত মাত্রায় হৃদরোগের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এমনকি হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপরও এটি একই প্রভাব ফেলে।
যাদের অ্যালার্জি আছে
পেঁপেতে থাকে ল্যাটেক্স। যা অ্যালার্জি আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। পেঁপেতে থাকে কাইটিনেস নামক এনজাইম থাকে।
ল্যাটেক্স ও কাইটিনেস এনজাইম একত্রে বিপরীত প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। ফলে হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, কাশি ও চোখ দিয়ে জল পড়ার সমস্যায় ভুগতে পারে। অনেকেই পাকা পেঁপের গন্ধও সহ্য করতে পারে না।
কিডনিতে পাথর থাকলে
পেঁপেতে ভিটামিন সি আছে। দৈনিক মাত্রার চেয়েও যদি ভিটামিন সি অত্যধিক গ্রহণ করা হয় তাহলে ক্যালসিয়াম অক্সালেট কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। এমনকি এটি পাথরের আকার বাড়িয়ে তোলে। যা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হতে পারে না।
ডায়াবেটিস রোগীদের
পেঁপে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে যারা হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় ভুগছেন অর্থাৎ যাদের রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করা হঠাৎ নেমে যায়, তারা পেঁপে খাবেন না।
কারণ মিষ্টি স্বাদের এই ফলে অ্যান্টি-হাইপোগ্লাইসেমিক বা গ্লুকোজ-হ্রাসকারী প্রভাব আছে। তাই হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্তদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা আরও কমিয়ে দিতে পারে পেঁপে। বিভ্রান্তি, দুর্বলতা ও দ্রুত হৃদস্পন্দনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।