যে কোনো আমিষ রান্নার স্বাদ বৃদ্ধিতে পেঁয়াজের গুরুত্ব অপরিহার্য। পেঁয়াজ ছাড়া যেন রান্নার স্বাদ পূর্ণতা পায় না। অনেকেই গরম ভাতের সাথে কাঁচা পেঁয়াজও পছন্দ করেন। শুধু তাই নয়, ত্বক ও চুলের যত্নেও আজকাল পেঁয়াজের ব্যবহার বাড়ছে।
তবে পেঁয়াজ কাটার পর সাধারণত খোসাগুলো সরাসরি আবর্জনার পাত্রে যায়। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে এই ফেলনা পেঁয়াজের খোসারও রয়েছে অসাধারণ কিছু গুণাগুণ। আসুন, পেঁয়াজের খোসার তেমনই কিছু অজানা উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
> চুলের প্রাকৃতিক রঙ: দুই-তিনটি পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে নিন। একটি লোহার কড়াই গরম করে তাতে খোসাগুলো দিয়ে দিন। খোসা পুড়ে কালো হয়ে গেলে গ্যাস বন্ধ করুন। এবার এই পোড়া খোসাগুলো ভালোভাবে পিষে মিহি গুঁড়ো করে নিন। এই পাউডার অ্যালোভেরা জেল বা হেয়ার অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগালে প্রাকৃতিক কালারের কাজ করে। তবে কয়েকবার শ্যাম্পু করার পর এই রঙ হালকা হতে পারে।
> খাবারের স্বাদ বাড়াতে: পেঁয়াজের খোসা খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে দারুণ ভূমিকা রাখে। স্যুপ, স্ট্যু এবং অন্যান্য রান্নায় শুকনো বা ভাজা পেঁয়াজের খোসার গুঁড়ো মেশালে খাবারের স্বাদ আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
> ব্যথা নিরাময়ে: শরীরে ব্যথা বা পেশীতে টান লাগলে পেঁয়াজের খোসার চা পান করতে পারেন। এক কাপ জলে কয়েকটি পেঁয়াজের খোসা সিদ্ধ করে নিন। স্বাদ বাড়াতে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
> ভালো ঘুম ও স্নায়ুর প্রশান্তি: পেঁয়াজের খোসার চা শুধু ব্যথাই কমায় না, এটি ভালো ঘুম এনে দিতেও সহায়ক। এছাড়াও, স্নায়ুর সমস্যা নিরাময়েও এই চা উপকারী।
> চুলের যত্নে টনিক: চুল যদি রুক্ষ, শুষ্ক ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং অতিরিক্ত ঝরে, তাহলে পেঁয়াজের খোসা দিয়ে তৈরি হেয়ার টোনার ব্যবহার করতে পারেন। পেঁয়াজে সালফার রয়েছে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে। কয়েকটি পেঁয়াজের খোসা জলে সেদ্ধ করুন। জল ফুটতে ফুটতে বাদামী হয়ে এলে গ্যাস বন্ধ করে ঠাণ্ডা হতে দিন। মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে ভরে চুল ও স্ক্যাল্পে ব্যবহার করুন।
> প্রাকৃতিক সার: প্রতিদিন পেঁয়াজের খোসা একটি কৌটোয় জমা করতে থাকুন। প্রাকৃতিকভাবে এগুলো পচে গিয়ে উৎকৃষ্ট সারে পরিণত হবে। ঘরে তৈরি এই সার গাছের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়ক।
সুতরাং, এরপর থেকে পেঁয়াজের খোসা আবর্জনায় না ফেলে এই অসাধারণ গুণাগুণ কাজে লাগান এবং পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করুন।