রাতে আপনি কতক্ষণ ঘুমান? ছয় ঘণ্টা, আট ঘণ্টা নাকি তারও কম? যারা রাতে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান, তাদের জন্য একটি উদ্বেগজনক খবর রয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ছয় ঘণ্টার কম ঘুম হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে, যার মধ্যে রয়েছে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা।
মাদ্রিদের স্প্যানিশ ন্যাশনাল সেন্টার ফর কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, যারা নিয়মিত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান, তাদের তুলনায় যারা মাত্র ছয় ঘণ্টা বা তার কম সময় ঘুমান, তাদের হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ বেশি।
গবেষকরা বলছেন, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে রক্তনালী সরু হয়ে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এর ফলে শরীরে রক্ত প্রবাহ ব্যাহত হয় এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। তাদের মতে, হৃদরোগের চিকিৎসায় ঘুমের অভ্যাসের পরিবর্তন ওষুধের চেয়েও দ্রুত এবং কার্যকর ফল দিতে পারে।
আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির জার্নালে প্রকাশিত এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাটি স্পেনের ৪ হাজার ব্যাংক কর্মকর্তার উপর চালানো হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ছিল ৪৬ বছর এবং গবেষণার শুরুতে তাদের কারোই হৃদরোগের কোনো পূর্ব ইতিহাস ছিল না। বিজ্ঞানীদের একটি দল দীর্ঘ সময় ধরে তাদের ঘুমের অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করেন। এরপর থ্রিডি হার্ট আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে তাদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ছয় ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছেন, তারা অন্যদের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই ফলাফল ঘুমের অভাব এবং হৃদরোগের মধ্যে একটি শক্তিশালী যোগসূত্র স্থাপন করে।
গবেষকরা জোর দিয়ে বলছেন, সুস্থ হৃদযন্ত্রের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কের উচিত প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো। ঘুমের অভাবকে অবহেলা করা উচিত নয়, কারণ এটি দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে