আপনার আদরের সন্তানটি ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে, কিন্তু রাতের বেলা বিছানা ভেজানোর অভ্যাস কিছুতেই যাচ্ছে না? এই বিব্রতকর সমস্যায় ভোগেননি এমন বাবা-মা খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ওহায়োর ক্লিভলেন্ড ক্লিনিকের একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এই সমস্যা সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। আসুন, সেই উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক:
১) রাতের খাবারের পর তরল খাবার বন্ধ: রাতের খাবারের পরপরই শিশুকে জল বা অন্য কোনও তরল পানীয় খেতে দেবেন না। এতে ঘুমের মধ্যে প্রস্রাবের চাপ কম হবে।
২) ঘুমের আগে একবার প্রস্রাব: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শিশুকে একবার অবশ্যই প্রস্রাব করিয়ে নিয়ে যান। তবে এটি রোজকার অভ্যাসে পরিণত করবেন না। চিকিৎসকরা বলছেন, সবসময় এমনটা করলে শিশুর স্বাভাবিক ঘুম ব্যাহত হতে পারে এবং তারা হতাশ হয়ে পড়তে পারে।
৩) দিনের বেলায় পানীয়ের রুটিন: দিনের বেলায় কখন আপনার সন্তান জল বা অন্যান্য তরল খাবার বেশি খাবে, তার একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী তৈরি করুন।
৪) বাথরুমে যাওয়ার সময় নির্ধারণ: শিশুদের বাথরুমে যাওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। খেয়াল রাখুন, তারা যেন প্রতি দুই থেকে তিন ঘণ্টা অন্তর বাথরুমে যায়।
৫) রাতে ক্যাফেইন ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন: রাতের বেলা চকলেট মিল্ক, কোকো বা অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় শিশুকে দেবেন না। যদি এতেও কাজ না হয়, তাহলে সাইট্রাস জাতীয় জুস ও মিষ্টি খাবারও বন্ধ করে দেখুন।
৬) কোষ্ঠকাঠিন্য পরীক্ষা করান: অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণেও শিশুরা বিছানায় প্রস্রাব করে থাকে। তাই আপনার সন্তানের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে কি না, তা জানতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৭) পুরস্কার দিন, শাস্তি নয়: যে রাতে আপনার শিশু বিছানা শুকনো রাখবে, ক্যালেন্ডারে সেই দিনগুলো লাল কালি দিয়ে দাগ দিতে বলুন। বিছানায় প্রস্রাব না করার জন্য তাকে ছোটখাটো পছন্দের পুরস্কার দিন। তবে ভুলেও এই অভ্যাসের জন্য তাকে বকাঝকা বা শাস্তি দেবেন না। শাস্তি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা যায় না।
৮) প্রাকৃতিক কিছু উপায়: এছাড়াও কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন। আপনার বাচ্চাকে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ছোট এক টুকরো দারুচিনি চিবিয়ে খেতে দিতে পারেন। সকালের নাস্তায় টোস্ট বা বাটারের সঙ্গে সামান্য দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়েও খাওয়াতে পারেন। এছাড়াও, নিম্নাঙ্গের আশেপাশে সামান্য উষ্ণ অলিভ অয়েল মালিশ করলেও উপকার পাওয়া যেতে পারে।
মনে রাখবেন, বিছানায় প্রস্রাব করার বিষয়টি অনেক শিশুর ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক এবং সময়ের সাথে সাথে এটি সেরে যায়। ধৈর্য ধরুন এবং উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে আশা করা যায় আপনার সন্তান খুব শীঘ্রই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।