কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা বয়স নির্বিশেষে যে কোনো সময় হতে পারে। যদিও অনেকেই এটিকে বার্ধক্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করেন, পুষ্টিবিদরা বলছেন যে এটি খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ম, পর্যাপ্ত জল পান না করা, ভাজাভুজি বা বাইরের তেল-মশলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া এবং শরীরে ফাইবারের ঘাটতির ফল। তবে এই সমস্যা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, কারণ ঘরোয়া উপায়ে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ম: অপর্যাপ্ত ফাইবার গ্রহণ, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার।
জল কম পান করা: পর্যাপ্ত জল পান না করলে মল শুষ্ক ও কঠিন হয়ে যায়।
অতিরিক্ত ভাজাভুজি ও বাইরের খাবার: এই ধরনের খাবারে ফাইবারের পরিমাণ কম থাকে এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি বেশি থাকে।
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: নিয়মিত ব্যায়ামের অভাব।
ঘরোয়া প্রতিকার:
১. আমলকির রস: ভিটামিন সি এবং এ সমৃদ্ধ আমলকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও কার্যকর। কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীরা প্রতিদিন গরম জলে আমলকির রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
২. চিয়াবীজ: প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবারে ভরপুর চিয়াবীজ কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য একটি চমৎকার ঘরোয়া ওষুধ। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। ফাইবারের উপস্থিতি মলকে নরম করে সহজে বের হতে সাহায্য করে।
৩. নারকেল তেল: রূপচর্চা এবং ওজন কমানোর পাশাপাশি নারকেল তেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সহায়ক। নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড মল নরম করে এবং মলের গতি বাড়ায়। রান্নার কাজে নারকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা স্যালাডের উপর ছড়িয়েও খাওয়া যায়।
৪. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: হজমশক্তি ঠিক রাখতে ফাইবারের জুড়ি নেই, এবং হজমের গোলমাল থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্ম। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখতে বেশি করে ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। বেরি, ওটস, বিনস, ডাল এবং মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা নিয়মিত গ্রহণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমে।
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি অস্বস্তিকর সমস্যা হলেও, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং এই সহজ ঘরোয়া টোটকাগুলো মেনে চললে সহজেই এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত এই খাবারগুলো গ্রহণ কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।