ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকার নানা প্রচেষ্টা থাকে আমাদের। কারণ এই নীরব ঘাতক একবার দেখা দিলে ধীরে ধীরে তা শরীরের নানা ক্ষতি করতে থাকে। বর্তমানে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অনেকে জানেনই না যে তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সচেতনতার অভাব এখানে বড় কারণ হিসেবে কাজ করে।
আমাদের রক্তে শর্করা বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়। বিশেষ করে চোখ, কিডনি, নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অঙ্গগুলো বিকলও হয়ে যেতে পারে। তাই ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকার সব রকম চেষ্টা করতে হবে। আমাদের কিছু ভুল অভ্যাস শরীরের এই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই সচেতন হতে হবে। জীবনযাপনেও আনতে হবে কিছু পরিবর্তন। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ডায়াবেটিস দূরে রাখতে হলে সবার আগে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ওজন। কারণ অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে, মাত্র ৭ শতাংশ ওজন কমিয়ে নিতে পারলেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে অনেকটাই। ওজন কমানোর জন্য খাবারের তালিকায় পরিবর্তন নিয়ে আসার পাশাপাশি শরীরচর্চা করতে হবে। দিনে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করলেই মিলবে উপকার।
ঘাম ঝরাতে হবে
বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই দীর্ঘ সময় একই জায়গায় বসে থাকার মতো কাজ করেন। শরীরের নড়াচড়া খুব একটা হয় না। পরিশ্রমের কাজ না করাও ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তাই ঘাম ঝরাতে হবে। যেটুকু পথ হাঁটা সম্ভব, হাঁটুন। দীর্ঘ সময় একই জায়গায় বসে থাকবেন না। পরিশ্রম করে ঘাম ঝরাতে পারলে তা আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে কাজ করবে। ফলে ডায়াবেটিস দূরে রাখা সহজ হবে।
নিরামিষ খান
উদ্ভিজ্জ খাবারে থাকে ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবার। যে কারণে নিরামিষ খাবার খেলে শরীরে নানা উপকার পাওয়া যায়। এ জাতীয় খাবারে থাকা ফাইবার কমিয়ে দেয় রক্তে শর্করার মাত্রা। এটি ওজন বৃদ্ধিতেও বাধা দেয়। তাই নিয়মিত সবজি-ফল খেতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, নিয়মিত উদ্ভিজ্জ খাবার খেলে ওজন কমানো সহজ হয়। সেইসঙ্গে শরীরও পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়।
খেতে হবে উপকারী ফ্যাট
ফ্যাট মানেই ক্ষতিকর নয়। কিছু ফ্যাট আছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ ধরনের ফ্যাট ওজন তো কমায়ই, সেইসঙ্গে বৃদ্ধি করে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি। আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যোগ করুন খাবারের তালিকায়। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও আপনার উপকার করবে। কাঠবাদাম, আখরোট, চিয়া সিড, স্যামন, টুনা মাছ ইত্যাদিতে পাবেন উপকারী ফ্যাট।
রক্তে শর্করার মাত্রা মাপতে হবে
নিয়মিত শর্করার পরিমাণ মাপলে ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকা সহজ হয়। সেজন্য বছরে একবার পরীক্ষা করাতে হবে। ফাস্টিং সুগার ১০০-এর মধ্যে থাকলে বুঝতে হবে ব্লাড সুগার নেই। কারও সুগার ১০০ থেকে ১২৬-এর মধ্যে থাকলে তাকে বলা হয় প্রিডায়াবেটিস। এক্ষেত্রে একটু সতর্ক হয়ে চললেই ডায়াবেটিস এড়ানো সম্ভব।