সুস্থ শরীরের জন্য পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ। এটি আমাদের নার্ভের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে, মাংসপেশির মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখে এবং শরীরে তরল পদার্থের সমতা রক্ষা করে। তবে পটাশিয়ামের সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো হৃদস্পন্দনে সাহায্য করা।
যখন শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমে যায়, তখন ডাক্তারি পরিভাষায় তাকে হাইপোক্যালেমিয়া বলা হয়। কোনো ব্যক্তির শরীরে পটাশিয়ামের স্তর ৩.৬ মিলিমোলস প্রতি লিটারের কম হলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
অনেক সময় দেখা যায়, খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম না থাকার কারণে শরীরে এর অভাব দেখা দেয়। এর ফলে বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। তবে পটাশিয়ামের অভাব শরীরে আরও বেশ কিছু গুরুতর সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে পটাশিয়ামের অভাব হলে দুশ্চিন্তা বাড়ে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ধীরে ধীরে অনিন্দ্রা বা ইনсомনিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কম হলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে অর্থাৎ বেশি পরিমাণে নুন খেলে এই বিপদ আরও বাড়ে। পটাশিয়াম রক্ত প্রবাহকে মাঝে মাঝে বিশ্রাম দেয়, ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকে।
হার্ট রিদম বা হৃদস্পন্দনের অনিয়মিততা হাইপোক্যালেমিয়া বা পটাশিয়াম ঘাটতির একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হলে প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
শরীরে পটাশিয়ামের অভাব থাকলে শরীরে একেবারেই এনার্জি থাকে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্তি অত্যন্ত বেশি অনুভূত হয়। এছাড়াও, পটাশিয়ামের অভাবে পেট ফাঁপা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে, কারণ পাচনক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
সুতরাং, শরীরে পটাশিয়ামের সঠিক মাত্রা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য খাদ্যতালিকায় অবশ্যই কিছু পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যোগ করা উচিত। উল্লেখযোগ্য পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো আলু, ডালিম, রাঙা আলু, পালং শাক, সাদা বিন, ডাবের জল, বিট, সয়াবিন, টমেটো ইত্যাদি। এই খাবারগুলো নিয়মিত খেলে শরীরে পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করা সম্ভব এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো যায়।