মাথা ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও যদি তা ঘন ঘন ফিরে আসে এবং দৈনন্দিন জীবনে বাধা সৃষ্টি করে, তবে সতর্ক হওয়া জরুরি। অনেক সময় শরীর মাথা ব্যথার মাধ্যমে কোনো গভীর সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশেষ করে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ মাথা ব্যথার সঙ্গে যুক্ত থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মাথা ব্যথার সঙ্গে যেসব লক্ষণ দেখা গেলে সতর্ক হবেন:
দৃষ্টি, হাঁটা বা কথা বলতে অসুবিধা: যদি মাথা ব্যথার সঙ্গে চোখে দেখতে, হাঁটতে বা কথা বলতে সমস্যা হয়, তবে তা স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
ঘাড়ে ব্যথা ও ঘাড় ঘোরাতে সমস্যা: ঘাড়ের তীব্র ব্যথা বা ঘাড় ঘোরাতে অসুবিধা মস্তিষ্কের কোনো সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
বমি ভাব বা বমি: মাথাব্যথার সঙ্গে বমি ভাব বা বমি হলে তা মাইগ্রেন বা অন্যান্য গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে।
উচ্চ জ্বর: যদি ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর থাকে এবং তার সঙ্গে মাথা ব্যথা হয়, তবে তা সংক্রমণ বা অন্য কোনো জটিল রোগের ইঙ্গিত দেয়।
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: মাথা ব্যথার কারণে অজ্ঞান হয়ে গেলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
শরীরের কোনো অংশে অসাড়তা: শরীরের কোনো এক দিকের নড়াচড়ায় বাধা বা অসাড়তা অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
বারবার ফিরে আসা মাথাব্যথা: যদি মাথাব্যথা বারবার ফিরে আসে এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়, তবে এটি কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
মাথা ব্যথার বিভিন্ন ধরণ:
স্ট্রেস বা টেনশনজনিত মাথাব্যথা: এই ব্যথা সাধারণত কপাল ও মাথার পিছন দিকে অনুভূত হয়। ঘুম, হালকা গরম জলে স্নান বা অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা কমে যায়।
সাইনাসজনিত মাথাব্যথা: ঋতু পরিবর্তনের সময় বা ঠান্ডা লাগলে এই ধরনের ব্যথা হয়। নাকের ব্রিজে শুরু হয়ে কপাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং দপদপ করে।
মাইগ্রেন: এই ব্যথা সাধারণত কপালের দু’পাশে শুরু হয়ে চোখ ও মাথার পিছন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এর সঙ্গে মাথা ঘোরা ও বমি ভাব থাকতে পারে। আলো বা শব্দের কারণে এই ব্যথা বাড়তে পারে।
মাথা ব্যথা কমানোর সহজ উপায়:
বিশ্রাম: কাজ থেকে বিরতি নিয়ে অন্ধকার ও শান্ত ঘরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে মাথা ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
পর্যাপ্ত জল পান: শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকলে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত জল পান করা জরুরি।
কফি ও চা-এর উপর নির্ভরশীলতা কমান: মাথা ব্যথা কমাতে ক্যাফেইনের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা ভালো নয়।
ম্যাসেজ: টেনশন বা সাইনাসজনিত মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে ঘাড় এবং কাঁধের হালকা ম্যাসেজ করলে আরাম পাওয়া যায়।
সুগন্ধি এড়িয়ে চলুন: কিছু সুগন্ধি বা পারফিউম মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। তাই এই ধরনের জিনিস ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।
যদি এই সাধারণ উপায়গুলোতেও মাথা ব্যথা না কমে, তবে ঝুঁকি না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।