মাছ ও ভাত ভোজনপ্রিয় বাঙালির প্রিয় খাবার। মাছের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা জানলেও, এর ডিমের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানি না। মাছের ডিমে রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা, যা শরীরের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
এ বিষয়ে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো যুগান্তরকে বলেন, ডিম যা ক্যাভিয়ার বা রো হিসেবে পরিচিত, এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট হিসেবে শরীরে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, মাছের ডিমের এমন কিছু উপাদান ও পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা শরীরের অনেক সমস্যা দূর করে। আসুন জেনে নিই মাছের ডিমের অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো:
১. মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করে
মাছের ডিমে থাকা এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। গবেষকদের মতে, মাছ ও মাছের ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতেও সহায়ক।
২. চোখের জ্যোতি বাড়ায়
মাছের ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, যা চোখ ভালো রাখে। এছাড়াও, এতে থাকা ডিএইচএ (DHA) ও ইপিএ (EPA) শিশুদের চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং রেটিনার কার্যকারিতাকে উন্নত করে, যা দৃষ্টিশক্তিকে তীক্ষ্ণ রাখে।
৩. রক্ত পরিষ্কার ও অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ
মাছের ডিমে থাকা স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলো রক্ত পরিষ্কার করে এবং হিমোগ্লোবিন বাড়ায়, যা অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। এটি শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণেও ভূমিকা রাখে।
৪. হাড় ও দাঁত মজবুত করে
মাছের ডিমে থাকা ভিটামিন ডি হাড় শক্ত করে এবং দাঁত মজবুত করে ও ভালো রাখে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।
৫. হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী
মাছের ডিম হৃদপিণ্ডের রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন ডি হার্টের অসুখ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও প্রদাহ হ্রাস
মাছের ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এবং প্রদাহ হ্রাস করে। ফলে এটি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় এবং রক্তনালীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
মাছের ডিম শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। এতে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।