বদহজমকে বলুন বিদায়, ঘরোয়া এই উপায়েই হয়ে উঠুন সুস্থ! জানুন

বদহজম একটি অতি পরিচিত এবং অস্বস্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা। পেট ফাঁপা, ঘন ঘন ঢেঁকুর তোলা, বুক জ্বালা বা অম্লতা, এবং বমি বমি ভাব—এগুলো সবই বদহজমের সুস্পষ্ট লক্ষণ। তবে আশার কথা হলো, সামান্য সচেতনতা এবং কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

প্রথমেই নজর দেওয়া যাক আমাদের খাদ্যাভ্যাসের দিকে। তাড়াহুড়ো করে খাবার গেলা একটি সাধারণ অভ্যাস, যা বদহজমের অন্যতম প্রধান কারণ। খাবার ধীরে ধীরে এবং ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে হজম প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়। এর পাশাপাশি, অতিরিক্ত তেল ও মশলাযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত চা-কফি পরিহার করা উচিত। এগুলো আমাদের হজমতন্ত্রের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। পরিমিত আহার গ্রহণ বদহজম এড়ানোর প্রথম পদক্ষেপ।

অনেকেরই খাওয়ার পরপরই বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার অভ্যাস থাকে, যা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। হজম প্রক্রিয়াকে সঠিক পথে চালিত করতে খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর হালকা হাঁটাহাঁটি করা জরুরি। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা, বিশেষ করে হালকা গরম জল, আমাদের পেট পরিষ্কার রাখতে এবং হজমক্ষমতাকে উন্নত করতে সহায়ক।

প্রকৃতির ভাণ্ডারেও রয়েছে বদহজম নিরাময়ের চমৎকার উপাদান। আদা, পুদিনা পাতা, জিরা এবং লেবুর মতো প্রাকৃতিক উপাদানগুলি হজম সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে দারুণ কাজ করে। এক গ্লাস হালকা গরম জলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এবং সামান্য লবণ মিশিয়ে পান করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।

মানসিক চাপ আমাদের শরীরের অন্যান্য অংশের মতো হজম প্রক্রিয়ার উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই প্রতিদিন কিছু সময় ধ্যান (মেডিটেশন) বা হালকা ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুললে কেবল শরীর নয়, আমাদের হজমক্ষমতাও উন্নত হয়।

সবশেষে মনে রাখতে হবে, একটি নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন বদহজম থেকে মুক্তি পাওয়ার চাবিকাঠি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত ঘুম এবং শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা—এই তিনটি অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে বদহজম অনেকাংশে কমে যাবে। তবে যদি বদহজমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অবহেলা না করে সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy