আমাদের শরীরের সঠিক কার্যকারিতার জন্য লিভার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। লিভারের বিভিন্ন ব্যাধির মধ্যে ফ্যাটি লিভার একটি সাধারণ সমস্যা, যা সাধারণত স্থূলকায় এবং যাদের পেটে অতিরিক্ত মেদ জমে, তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই অবস্থায় লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমতে শুরু করে, যার ফলে লিভারের কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
ফ্যাটি লিভার মূলত দুই প্রকারের হয়: অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। যারা অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করেন, তাদের মধ্যে প্রথম প্রকারের সমস্যা দেখা যায়, আর বাকিদের ক্ষেত্রে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার দেখা দেয়।
যারা ইতিমধ্যেই ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা অত্যন্ত জরুরি। এর পাশাপাশি, কিছু আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া প্রতিকারেও ভরসা রাখা যেতে পারে।
ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে করণীয়:
১. চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন: ভাজাপোড়া এবং তৈলাক্ত খাবার লিভারে চর্বির পরিমাণ আরও বাড়ায়। তাই এ ধরনের খাবার সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা উচিত।
২. শীতল ও নন-অ্যাসিডিক খাবার: আপনার খাদ্যতালিকায় বেরি, নাশপাতি এবং তরমুজের মতো শীতল ও নন-অ্যাসিডিক ফল অন্তর্ভুক্ত করুন। এই ফলগুলি লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
৩. আস্ত শস্য ও তাজা শাকসবজি: কুইনোয়ার মতো আস্ত শস্যের সঙ্গে তাজা মৌসুমি শাকসবজি নিয়মিত গ্রহণ করুন। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করবে এবং লিভারের উপর চাপ কমাবে।
৪. জুসের উপকারিতা: নিয়মিত তরমুজের রস বা অ্যালোভেরার রস পান করতে পারেন। এই রসগুলি শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে এবং লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক।
৫. গোলমরিচ ও মধু: টানা এক মাস নিয়মিত ২ গ্রাম গোলমরিচ গুঁড়ো এবং ১ চা চামচ মধুর মিশ্রণ খেলে উপকার পাওয়া যায় বলে আয়ুর্বেদে বিশ্বাস করা হয়।
৬. আমলার রস: প্রতিদিন ১০-২০ মিলি লিটার আমলার রস পান করুন। আমলা লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত উপকারী।
৭. কুটকির গুঁড়া: ১-৩ গ্রাম কুটকির গুঁড়া দিনে দু’বার খাবারের পর জল মিশিয়ে পান করতে পারেন। কুটকি লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে আয়ুর্বেদে ব্যবহৃত হয়।
সতর্কতা: আপনার ডায়েটে কোনো বড় পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসক বা আপনার পারিবারিক ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। কারণ প্রতিটি ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ভিন্ন হতে পারে এবং প্রত্যেকের জন্য একই পদ্ধতি কার্যকর নাও হতে পারে।