পুরোপুরি সুস্থ মানুষেরও স্ট্রোক হতে পারে! ৬ লক্ষণ দেখলেই হয়ে যান সাবধান

স্ট্রোককে সাধারণত বয়স্ক বা অসুস্থদের সমস্যা বলে মনে করা হলেও, অনেক সময় আপাতদৃষ্টিতে সম্পূর্ণ সুস্থ ব্যক্তিরও স্ট্রোক হতে পারে। মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হলে স্ট্রোক হয়, যার ফলে অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না।

পাটিয়ালার মণিপাল হাসপাতালের সিনিয়র নিউরোলজিস্ট ডাঃ সতবন্ত সচদেবের মতে, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো পরিচিত কারণ ছাড়াও কিছু ‘নীরব কারণ’ রয়েছে, যা সুস্থ ব্যক্তিদেরও মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

🚨 স্ট্রোকের সাধারণ লক্ষণগুলি

 

স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা মাত্রই দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। স্ট্রোকের সাধারণ লক্ষণগুলি হলো:

  • মুখ ঝুলে পড়া (Face Drooping)
  • শরীরের এক অংশে হঠাৎ দুর্বলতা বা অসাড়তা (Sudden Numbness)
  • কথা বলতে অসুবিধা (Difficulty Speaking)
  • হঠাৎ এবং তীব্র মাথাব্যথা (Severe Headache)
  • মাথা ঘোরা বা ভারসাম্য হারানো (Dizziness/Loss of Balance)
  • দেখতে সমস্যা (Vision Problems)

🧠 স্ট্রোকের লুকোনো বা ‘নীরব’ কারণগুলো

 

ডাঃ সতবন্ত সচদেব এমন কিছু কারণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যা সাধারণত উপেক্ষা করা হয়:

  1. মানসিক চাপ (Long-term Stress): দীর্ঘমেয়াদী স্ট্রেস এবং ঘুমের অভাব শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। এই হরমোন রক্তনালীর ক্ষতি ঘটায় এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  2. জলশূন্যতা (Dehydration): পর্যাপ্ত জল পান না করলে রক্ত ঘন হয়ে যেতে পারে। রক্ত ঘন হলে রক্তনালীর ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বহু গুণ বেড়ে যায়, যা স্ট্রোকের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
  3. অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস: ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, ক্র্যাশ ডায়েট (Crash Diet) বা অতিরিক্ত তীব্র ব্যায়ামও রক্তনালীর উপর চাপ ফেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
  4. পারিবারিক ইতিহাস (Family History): পরিবারের কারো স্ট্রোক বা রক্ত জমাট বাঁধার ইতিহাস থাকলে জিনগত কারণে আপনার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

✅ স্ট্রোক প্রতিরোধের সহজ জীবনধারা পরামর্শ

 

ডাঃ সচদেবের বক্তব্য অনুযায়ী, সুস্থ থাকা সত্ত্বেও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রত্যেকের জন্য জরুরি। স্ট্রোক প্রতিরোধে এই সহজ জীবনধারার পরিবর্তনগুলি মেনে চলুন:

  • জলপান: সারাদিন পর্যাপ্ত জল পান করে শরীরকে জলশূন্যতা থেকে রক্ষা করুন।
  • সুষম খাদ্য ও ব্যায়াম: সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খান এবং নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপে যুক্ত হন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম রক্তনালীগুলিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • বর্জন: ধূমপান, অ্যালকোহল এবং ক্র্যাশ ডায়েট সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলুন।
  • নিয়মিত চেকআপ: হার্টের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে নিয়মিত চেকআপ করান এবং পরিবারের স্ট্রোকের ইতিহাস থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy