পিত্তথলিতে ব্যথা: শুধু পাথর নয়, আরও যা কিছু হতে পারে কারণ!

লিভারের নীচে ডান দিক ঘেঁষে অবস্থিত একটি ছোট অঙ্গ হলো পিত্তথলি (গলব্লাডার)। লিভার বা যকৃত দ্বারা উৎপাদিত অতিরিক্ত পিত্ত এই পিত্তথলি বা গলব্লাডারে এসে জমা হয়। গলব্লাডার বা পিত্তথলিতে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে, যার মধ্যে পিত্তথলির পাথরে বেশি মানুষ ভোগেন। এতে পেটের উপরের অংশের ডানদিকে তীব্র ব্যথা হয়। তবে পিত্তথলিতে ব্যথার একমাত্র কারণ কিন্তু সবসময় পাথর নয়। পিত্তথলিতে আরও বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে, যার ফলে গলব্লাডারের যন্ত্রণায় কষ্ট পান অনেকেই।

প্রাথমিকভাবে এই ব্যথার কারণ হিসেবে পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে বলে মনে করা হয়। তবে সব ক্ষেত্রে সেটাই একমাত্র কারণ নয়। পাথর হওয়া ছাড়াও গলব্লাডারে ব্যথার অন্য কারণগুলি কী?

পিত্তথলিতে ব্যথার অন্যান্য কারণ:
কোলেসিস্টিস (Cholecystitis): কোলেসিস্টিস দু’ধরনের হয় – অ্যাকিউট কোলেসিস্টিস ও অ্যাক্যালকুলাস কোলেসিস্টিস। অ্যাকিউট কোলেসিস্টিস ঘটে পিত্তথলিতে পাথর আটকে যাওয়ার ফলে। অন্যদিকে অ্যাক্যালকুলাস কোলেসিস্টিস হলো পিত্তনালিতে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, যা পাথর ছাড়াই পিত্তথলির প্রদাহ সৃষ্টি করে।
কোলেডোকোলিথিয়াস (Choledocholithiasis): পিত্তনালিতে পাথরের উপস্থিতি কোলেডোকোলিথিয়াস নামে পরিচিত। এটি পিত্তের প্রবাহকে রোধ করে, ফলে পিত্তনালিতে চাপ ও ব্যথা বেড়ে যায়।
বিলিয়ারি স্লাজ (Biliary Sludge): পিত্তথলিতে কোলেস্টেরল মনোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, বিলিরুবিন ও অন্যান্য লবণের সংমিশ্রণই হলো বিলিয়ারি স্লাজ। এই পদার্থগুলো জমা হয়ে পিত্তথলিতে ব্যথা হতে পারে এবং পাথরের মতো উপসর্গ তৈরি করতে পারে।
যেসব লক্ষণ জানান দেবে গলব্লাডারে সমস্যা তৈরি হয়েছে:
তীব্র পেটে ব্যথা: গলব্লাডারের যেকোনো সমস্যা দেখা দিলেই পেটের ডানদিকে ব্যথা হতে পারে। এক্ষেত্রে পেটের ডানদিক থেকে ব্যথা শুরু হয়ে ধীরে ধীরে সেই ব্যথা কোমর ও ডান কাঁধ পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। এরকম ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বমি বমি ভাব ও বমি: এক্ষেত্রে পেটের ডানদিকে তীব্র ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব, গা গোলানো ও বমিও হতে পারে। এটি পিত্তথলির প্রদাহ বা পিত্তনালিতে বাধার একটি সাধারণ লক্ষণ।
জ্বর: পিত্তথলিতে প্রদাহের কারণে শরীরের তাপমাত্রাও বাড়তে পারে। জ্বর জ্বর ভাব থাকতে পারে, যা সংক্রমণের ইঙ্গিত দেয়।
প্রস্রাবের পরিবর্তন: পিত্তথলিতে সমস্যা দেখা দিলে কিংবা পাথর জমার ফলে প্রস্রাবেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে গাঢ় রঙের প্রস্রাব হতে পারে, যা নির্দেশ করে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়েছে।
পাণ্ডুর ত্বক বা চোখ (জন্ডিস): যদি পিত্তনালিতে বড় পাথর আটকে যায় এবং পিত্তপ্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে জন্ডিস দেখা দিতে পারে। ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া এর প্রধান লক্ষণ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy