আমাদের মধ্যে অনেকেই নীরবে পিত্তথলিতে পাথরের সমস্যায় ভুগছেন। পেটে সামান্য ব্যথা অনুভব হলেও অনেকে গ্যাসের সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যান অথবা সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধ খান। তবে পিত্তথলিতে পাথর ছোট আকারের হলে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললে তা গলিয়ে দেওয়া বা প্রাকৃতিকভাবে বের করে দেওয়া সম্ভব। অন্যথায়, এই সমস্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং নানা জটিলতা সৃষ্টি করে।
যদি আপনিও পিত্তথলিতে পাথরের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে অপারেশন ছাড়াই পাথর গলানোর কয়েকটি সহজ উপায় জেনে নিন:
১. গোটা শস্য ও ফল: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই গোটা শস্য, ফলমূল এবং শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। এই খাবারগুলি পিত্তথলি থেকে পাথর দ্রুত বের করতে সাহায্য করে এবং পেটের ব্যথাও কমায়।
২. পর্যাপ্ত জল: পিত্তথলির পাথর দ্রুত গলাতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করা অপরিহার্য। পর্যাপ্ত জল পান করলে পাথর প্রাকৃতিকভাবে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। সম্ভব হলে জলের পাশাপাশি কমলালেবু বা লেবুর রস পান করার চেষ্টা করুন, যা শরীরের জন্যও উপকারী।
৩. সাইট্রাস ফল: পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার কারণে পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন। তবে ব্যথার উপশমের জন্য প্রতিদিন সাইট্রাস ফল (যেমন – লেবু, কমলা, বাতাবি) খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
৪. ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: দ্রুত পাথর গলাতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। দই, সয়াবিন, মটরশুঁটি, মসুর ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের বীজ হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং পাথর গলাতেও সহায়ক ভূমিকা নেয়।
৫. নুন ও রেডমিট ত্যাগ: এই সময় নুন জাতীয় খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। রেডমিট (যেমন – খাসির মাংস), চকোলেট এবং পালংশাক এড়িয়ে চলুন। যতটা সম্ভব চর্বিবিহীন খাবার খান।
৬. ওজন নিয়ন্ত্রণ: পিত্তথলিতে পাথর দ্রুত কমাতে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। অতিরিক্ত ওজন থাকলে তা কমাতে চেষ্টা করুন।
৭. হলুদ: বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা পেটের যেকোনো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। পিত্তথলিতে ব্যথা হলে হলুদ খেলে আরাম পাওয়া যায়।
৮. বেরি: বেরি জাতীয় ফল (যেমন – স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি) পিত্তথলির পাথর দ্রুত গলাতে খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে পাথর গঠনে বাধা দেয়।
যদিও এই ঘরোয়া উপায়গুলি ছোট আকারের পাথর গলাতে সাহায্য করতে পারে, তবে পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং তার নির্দেশিত পথ অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। কোনো প্রকার ঝুঁকি না নিয়ে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।