তরুণদের মধ্যে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাক, ঘুমের মধ্যে কেন হচ্ছে এই বিপদ?

হার্ট অ্যাটাক সাধারণত ভোরবেলা হয় বলে একটি প্রচলিত ধারণা থাকলেও, এখন ঘুমের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বাড়ছে। সম্প্রতি এক নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, তরুণদের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা উদ্বেগের কারণ। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে এই ঝুঁকি আরও বাড়ছে।

কীভাবে ঘটে হার্ট অ্যাটাক?

হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ হলো হৃৎপিণ্ডের রক্ত সরবরাহকারী করোনারি ধমনীতে প্লাক বা চর্বি জমা। এই প্লাক ফেটে গেলে রক্তক্ষরণ হয় এবং রক্তের জমাট বাঁধার কারণে ধমনীতে রক্ত চলাচল কমে যায় বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলেই হার্ট অ্যাটাক হয়।

ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের কারণ:

১. স্লিপ অ্যাপনিয়া: ঘুমের সময় আমাদের শরীরের সব পেশি শিথিল হয়ে যায়, যার মধ্যে গলা এবং ঘাড়ের পেশিও থাকে। ঘাড়ে অতিরিক্ত মেদ থাকলে তা শ্বাস-প্রশ্বাসের পথকে সংকুচিত করে দেয়, যাকে ‘অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বলা হয়। এর ফলে নাক ডাকা এবং সাময়িক শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রতি রাতে এমনটি বারবার হতে থাকলে শরীরকে অনবরত অক্সিজেনের ঘাটতির সঙ্গে লড়াই করতে হয়, যা হার্টের ওপর চাপ বাড়ায়।

২. রক্তচাপ বৃদ্ধি: স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকলে রাতে ঘুমের সময় রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তচাপ বাড়ে এবং অ্যাড্রেনালিন হরমোন নিঃসরণ হয়। এর ফলে হার্টকে স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়, যা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

৩. অনিদ্রা: অনিয়মিত ঘুমের সূচি এবং দীর্ঘস্থায়ী অনিদ্রা হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে কিছু বিষয়ে নজর রাখা জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য ডিপ ব্রিদিং, ইয়োগা, মেডিটেশন এবং নিয়মিত শরীরচর্চা খুবই উপকারী। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, অ্যালকোহল, চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার পরিহার এবং চা-কফি পানের পরিমাণ কমানো দরকার। সর্বোপরি, মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা কমানোর ওপর জোর দেওয়া উচিত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy