ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চিজ? নতুন গবেষণা বলছে ‘হ্যাঁ’, তবে বেছে নিতে হবে সঠিক চিজ!

চিজ বা পনির, যা সাধারণত গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার দুধ থেকে তৈরি হয়, প্রোটিন এবং দুধের চর্বিতে ভরপুর একটি জনপ্রিয় খাবার। দুধের প্রধান প্রোটিন কেসিন থেকে জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়। প্রাচীনকালে দুধ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যেই চিজ তৈরি শুরু হয়েছিল, যা ঠান্ডায় দীর্ঘ দিন ভালো থাকত এবং মানুষের পুষ্টির জোগান দিত। মোৎজারেলা, পারমেশান, ফেটা, সুইস চিজ, চেডার— সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিজের জগতে যুক্ত হয়েছে কত নাম।

পুষ্টিবিদদের মতে, চিজ প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস, তাই নিরামিষাশীরা রোজ খাবারে চিজ রাখতে পারেন। চিজে ক্যালসিয়ামও প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা আমাদের দেশের অনেক মহিলার ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণে সহায়ক। বিশেষত ঋতুবন্ধের পর মহিলাদের মধ্যে হাড়ের সমস্যা, যেমন অস্টিওপোরোসিস, দেখা যায়। এই সময় রোজকার খাবারে চিজ সংযোজন করা উপকারী হতে পারে, তবে অবশ্যই ফ্যাটের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ব্যক্তিবিশেষের স্বাস্থ্য অনুযায়ী তা ঠিক করতে হবে।

চিজের বহুমুখী স্বাস্থ্য সুবিধা:

চিজ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য তৈরীর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ থাকে, যা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে:

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: চিজে খুব কম মাত্রায় সোডিয়াম থাকে, যা শরীরে রক্তচাপ বাড়তে দেয় না। এছাড়াও, চিজে থাকা ভিটামিন বি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। তবে এক্ষেত্রে চিজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু দামি চিজ ব্যবহার করা ভালো, কারণ বাজারচলতি কম দামের চিজগুলোতে উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল এবং সোডিয়াম জাতীয় উপাদান থাকতে পারে। যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তারা চিজ কেনার আগে তার উপাদান সামগ্রী দেখে তারপরে তা নির্বাচন করুন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: সম্প্রতি বিএমজে নিউট্রিশন, প্রিভেনশন জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, এক বিশেষ প্রকার চিজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গবেষকদের মতে, ‘জার্লসবার্গ’ নামক এক বিশেষ ধরনের চিজে এই ক্ষমতা আছে। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এই চিজ রোজের ডায়েটে রাখলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং গ্লুকোজের মাত্রা উভয়ই কমে।

সুতরাং, চিজ কেবল একটি সুস্বাদু খাবারই নয়, এটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রারও একটি অংশ হতে পারে, বিশেষ করে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে। তবে, যেকোনো খাদ্য পরিবর্তনের আগে একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy