শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী খাবারগুলোর মধ্যে দুধ অন্যতম। বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকায় একে প্রায়শই আদর্শ খাবার হিসেবে গণ্য করা হয়। কারো পছন্দ গরম দুধ, আবার কেউ ভালোবাসেন ঠান্ডা দুধ পান করতে। তবে দুধ ঠান্ডা হোক বা গরম, উভয় প্রকারেই শরীরের জন্য বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা বিদ্যমান।
১. প্যাকেটজাত দুধ ও তাপমাত্রার নিয়ম: বাজারে উপলব্ধ প্যাকেটজাত দুধ পাস্তুরাইজ করার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। এই ধরনের দুধ সাধারণত গরম করেই খাওয়া উচিত। তবে টেট্রা প্যাকের দুধ ঠান্ডা অবস্থাতেও পান করা যেতে পারে। এর কারণ হলো, এই দুধ তুলনামূলকভাবে কম রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়, ফলে এর পুষ্টিগুণ বেশি মাত্রায় বজায় থাকে। তবে মনে রাখা জরুরি, ঠান্ডা দুধ শুধুমাত্র সকালেই পান করা উচিত। রাতে ঠান্ডা দুধ খেলে তা হজমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
২. ওজন কমানো ও ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব: ঠান্ডা দুধ খাওয়ার একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। ঠান্ডা দুধে থাকা ক্যালসিয়াম শরীরের বিপাকক্রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে, যার ফলে অধিক ক্যালোরি খরচ হয়। তবে শীতকাল এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা দুধ এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এই সময়ে ঠান্ডা দুধ খেলে সর্দি-কাশির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তাদের ঠান্ডা দুধের পরিবর্তে গরম দুধ পান করা উচিত, যা ভালো ঘুম আনতে সহায়ক।
৩. স্থূলতা, ঘুম ও হজমশক্তির সম্পর্ক: ঠান্ডা দুধ স্থূলতা কমাতে সহায়ক হতে পারে, তবে ভালো ঘুম এবং হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্য গরম দুধের প্রয়োজন। তাই কার জন্য কোন ধরনের দুধ বেশি উপকারী, তা বুঝে খাওয়াই শ্রেয়। যাদের দুধ থেকে তৈরি খাবার হজম করতে অসুবিধা হয়, তাদের ঠান্ডা দুধ এড়িয়ে চলা উচিত। ঠান্ডা দুধ তুলনামূলকভাবে ভারী হওয়ায় হজম করা কঠিন হতে পারে। বিপরীতে, গরম দুধে ল্যাকটোজের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে, যা এটিকে সহজে হজমযোগ্য করে তোলে।
পরিশেষে বলা যায়, দুধ ঠান্ডা হোক বা গরম, উভয়ই শরীরের জন্য উপকারী। তবে ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা, ঋতু এবং হজম ক্ষমতার উপর নির্ভর করে সঠিক তাপমাত্রা নির্বাচন করা উচিত। আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী দুধ পান করে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা লাভ করুন।