খাবার খাওয়ার পরে মৌরি খান? যেসব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে দেখুন

খাওয়ার পর মুখটা একটু তরতাজা করতে মৌরির কোনও বিকল্প নেই। তবে মুখ তরতাজা করে তোলার পাশাপাশি শরীরকে নানাবিধ জটিল রোগের হাত থেকে বাঁচাতেও এটি যে বিশেষ ভূমিকা নেয়, সে বিষযে জানা আছে কি? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত সকাল-বিকাল অল্প করে মৌরি খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যে ইতিবাচক বিভিন্ন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। জার্নাল অব ফুড সায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে মৌরি খাওয়া মাত্র আমাদের স্যালাইভা নাইট্রাইটের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যে কারণে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না। আসলে নাইট্রাইট, ব্লাড প্রসোরকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। প্রসঙ্গত, অরেকভাবে মৌরি রক্তচাপের লাগাম ধরে রাখে। এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম, যা রক্তে মেশার পর দেহের সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ কমতে শুরু করে।

শ্বাস-প্রশ্বাস, খাবার এবং আরও নানাভাবে সারা দিন ধরে নানা ধরনের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। এই টক্সিক উপাদানগুলি বেশি সময় আমাদের শরীরের এদিক-সেদিক ঘুরে বেরালে নানা ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়। তাই তো টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে যত দ্রুত সম্ভব বের করে দেওয়াই শ্রেয়। আর এই কাজটি করতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে মৌরি। নিয়মিত মৌরি খাওয়া শুরু করলে দেহে ফাইবার এবং এসেনশিয়াল অয়েলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা শরীর থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। এছাড়া মৌরি দিয়ে বানানো চা খেলে একদিকে যেমন দেহে অতিরিক্ত জল জমার সম্ভাবনা কমে, তেমনি রক্তে মিশে থাকা টক্সিক উপাদানগুলোও শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। তাছাড়া হজম ক্ষমতা বাড়াতে মৌরি ভেজানো জল বা সরাসরি মৌরি খাওয়া শুরু করতে পারেন। উপকার মিলবে। কারণ মৌরির মধ্যে থাকা এস্ট্রাগল, ফেঙ্কন এবং অ্যানথল নামক উপাদান, পেটের অন্দরে প্রদাহ তো কমায়ই, সেই সঙ্গে পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে গ্যাস-অম্বল এবং বদ-হজমের মতো সমস্যা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে। এর মধ্যে থাকা বিশেষ এক ধরনের তেল বর্জ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। পাশাপাশি এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ফুসফুসের কর্মক্ষমতা তো বাড়ায়ই, সেই সঙ্গে শ্বাস প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে শ্বাস কষ্ট এবং ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমতে বেশ দ্রুত কাজ করে। প্রসঙ্গত, কফ এবং সর্দি-কাশির প্রকোপ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ এর উপস্থিতির কারণে মৌরি দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি নানাবিধ চোখের সমস্যা দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে গ্লকোমা সম্পর্কিত নানা লক্ষণ কমাতেও সাহায্য করে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy