কিডনির বিপদ সংকেত, প্রস্রাবের এই ৮টি লক্ষণ দেখলেই অবিলম্বে সতর্ক হন, জীবন বাঁচাতে ডাক্তারই একমাত্র ভরসা!

মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি বা বৃক্ক। এর কোনো সমস্যা হলে তার প্রভাব পড়ে সারা শরীরে, এমনকি জীবনহানির ঝুঁকিও থাকতে পারে। তাই কিডনির কোনো ধরনের সমস্যাকেই বিন্দুমাত্র অবহেলা করা যাবে না। কিডনির সমস্যার প্রাথমিক এবং সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় প্রস্রাবে। অন্যান্য উপসর্গগুলো প্রায়শই এতটাই মৃদু হয় যে, রোগী টেরই পান না যে তিনি কিডনির গুরুতর রোগে ভুগছেন।

তবে, সর্বক্ষণ ক্লান্তি বোধ করা, অনিদ্রা, ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা, ত্বকে ঘা হওয়া, হাড়ের সমস্যা, এমনকি পা ফুলে যাওয়াও কিডনির অসুখের অন্যতম লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় এসব সমস্যাকে সাধারণ ভেবে আমরা এড়িয়ে যাই, কিন্তু তা হতে পারে মারাত্মক ভুল।

তবে, কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাবে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়, সেগুলো কিন্তু মোটেও অবহেলা করবেন না। প্রাথমিকভাবে কিডনির অসুখ শনাক্ত করা গেলে তা প্রতিরোধও করা সম্ভব, যার ফলে গুরুতর জটিলতা এড়ানো যায়।

কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাবে যে ৮টি জটিলতা দেখা দেয়:
১. বারবার প্রস্রাব হওয়া: স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশিবার প্রস্রাব করার প্রয়োজন হলে সতর্ক হন।
২. প্রস্রাব ক্লিয়ার না হওয়া: প্রস্রাব করার পরও যদি মনে হয় পেট পরিষ্কার হয়নি, বা প্রস্রাবের সম্পূর্ণ নিষ্কাশন হয়নি।
৩. রাতে বারবার ঘুম থেকে ওঠা: রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বার প্রস্রাবের জন্য ঘুম ভাঙলে তা চিন্তার বিষয়।
৪. প্রস্রাবের সঙ্গে পুঁজ যাওয়া: প্রস্রাবের সঙ্গে পুঁজ বা সাদা স্রাব নির্গত হলে এটি সংক্রমণের লক্ষণ।
৫. রক্ত বের হওয়া: প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া একটি অত্যন্ত গুরুতর লক্ষণ এবং এটি দ্রুত চিকিৎসার দাবি রাখে।
৬. প্রস্রাবে ফেনা হওয়া: প্রস্রাবে অস্বাভাবিক ফেনা তৈরি হওয়া কিডনির সমস্যার একটি সাধারণ লক্ষণ, যা প্রস্রাবে প্রোটিনের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
৭. পাথরের গুঁড়ো বের হওয়া: প্রস্রাবের সঙ্গে ছোট ছোট পাথরের কণা বা গুঁড়ো নির্গত হলে তা কিডনিতে পাথরের ইঙ্গিত দেয়।
৮. তলপেটে ও পাঁজরে ব্যথা: তলপেটে বা পাঁজরের অংশে (কিডনির অবস্থানে) তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন যেকোনো সমস্যা হলেই দ্রুত একজন ইউরোলজিস্টের (কিডনি ও মূত্রতন্ত্র বিশেষজ্ঞ) শরণাপন্ন হওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে, প্রস্রাবের সমস্যা খুব কম হওয়া বা খুব বেশি হওয়া—দুটোই কিন্তু কিডনি সমস্যার লক্ষণ।

স্বাভাবিক প্রস্রাবের মাত্রা: সাধারণত, দিনে ২-৩ বার এবং রাতে শোয়ার আগে ২-৩ বার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক। অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টায় ৪-৫ বার প্রস্রাব হওয়াকে সুস্থতার লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়।

আপনার কিডনি আপনার শরীরের ছাকনি। এর সুস্থতা নিশ্চিত করতে উপরের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং কোনো অস্বাভাবিকতা দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময় মতো ব্যবস্থা নিলে অনেক বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy