আপেল এবং পেয়ারা, এই দুটি ফলই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরিচিত এবং সহজলভ্য। তবে এই দুটির মধ্যে কোনটি বেশি উপকারী, তা নিয়ে বিতর্ক চলতেই থাকে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, মূলত দুটি ফলই কমবেশি সকলের খাদ্যতালিকায় থাকা উচিত। আপেলের কিছু বিশেষ পুষ্টিগুণ রয়েছে যা পেয়ারায় অনুপস্থিত, আবার পেয়ারা ভিটামিন সি-এর একটি চমৎকার উৎস।
পেয়ারার একটি বড় অসুবিধা হলো এতে প্রচুর পরিমাণে ছোট ছোট দানা থাকে, যার কারণে অনেকে এটি খেতে পছন্দ করেন না। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি হজম করতে বা খেতে অসুবিধা হতে পারে। অন্যদিকে, আপেল সাধারণত বীজবিহীন হওয়ায় সকলেই সহজে গ্রহণ করতে পারে।
তবে পুষ্টিগুণের বিচারে দুটি ফলই যথেষ্ট সমৃদ্ধ। উভয় ফলেই প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান। তাই চোখ বন্ধ করে এই দুটি ফলই খাওয়া যেতে পারে, এতে তেমন কোনো অসুবিধা নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আপেলের তুলনায় পেয়ারায় শর্করার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা পরিমিত পরিমাণে পেয়ারা খেতে পারেন। তবে আপেল খেলেও খুব বেশি সমস্যা হয় না, তবে সেক্ষেত্রে পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখতে হয়।
আপেলে থাকা ফাইবার শরীর থেকে খারাপ ফ্যাট বা কোলেস্টেরল বের করে দিতে সহায়ক, যা হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
কোন ফল কখন খাবেন?
পুষ্টিবিদরা পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, ব্রেকফাস্ট বা সকালের নাস্তা খাওয়ার প্রায় আধ ঘণ্টা পর পেয়ারা খাওয়া সবচেয়ে ভালো। এছাড়াও, দুপুরের খাবার বা লাঞ্চের এক ঘণ্টা আগেও পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে। তবে, রাতে একেবারেই পেয়ারা খাওয়া উচিত নয়। রাতে পেয়ারা খেলে ঠান্ডা লাগা থেকে শুরু করে জ্বর পর্যন্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, আপেল খাওয়ারও একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। ভর্তি পেটে আপেল খাওয়া উচিত, কারণ এই সময়ে ফল খেলে অ্যাসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। সকালের ব্রেকফাস্ট থেকে শুরু করে দুপুরের খাবারের পরের সময় পর্যন্ত আপেল খাওয়া যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, দিনের সবচেয়ে শেষ ফলটি বিকেলের মধ্যেই খেয়ে নেওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, আপেল ও পেয়ারা দুটি ফলেরই নিজস্ব পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে। তাই খাদ্যতালিকায় ভারসাম্য বজায় রেখে এবং খাওয়ার সঠিক সময় মেনে চললে উভয় ফলই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।