অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার: জীবন রক্ষাকারী ওষুধ কখন ডেকে আনে বিপদ?

অসুখ থেকে মুক্তি পেতে আমরা দ্বারস্থ হই অ্যান্টিবায়োটিকের। নানা ব্যথা-বেদনা দূর করতে এর বিকল্প নেই বললেই চলে। কিন্তু সমস্যা হলো এই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া নিয়ে। কখনো খাওয়া হয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে, আবার কখনোবা নিজেই চিকিৎসক বনে যাই, নিজেরাই খেয়ে ফেলি মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক। এর ফলে সংক্রমণজনিত রোগ হয়তো কমে, কিন্তু তার খারাপ প্রভাব রেখে যায় শরীরে। ভালো ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করার কারণে শরীরে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার দৌরাত্ম্য বাড়ে। তারপর অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মাশুল গুনতে হয় আজীবন। তাই জেনে নিন কোন অ্যান্টিবায়োটিক কম ক্ষতিকর, কোনটায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম এবং কতটা খেলে সুস্থ হবেন ওষুধের খারাপ প্রভাব ছাড়াই।

অ্যান্টিবায়োটিক কীভাবে কাজ করে?
একেক রকমের অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ একেক রকম:

১. নিউমোনিয়া কমাতে সাধারণত চিকিৎসকরা দেন ক্যুইনোলোনস। এই কম্পোজিশন মেলে লেভোফ্লক্সাসিন আর সিপ্রোফ্লক্সাসিনে।
২. পেনিসিলিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক কোষের গায়ে লেগে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
৩. এরিথ্রোমাইসিনে থাকে ম্যাক্রোলাইড অ্যান্টিবায়োটিক। এরা কোষের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া রাইবোসোমকে আক্রমণ করে এবং ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

অর্থাৎ, একেকটি অ্যান্টিবায়োটিক একেকভাবে কাজ করে। এগুলো শরীরের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মেরে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার:
সমস্ত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণেই সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। তবে সবটাই পর্যাপ্ত পরিমাণ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক: একসঙ্গে অনেক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ছড়ালে এটি ব্যবহৃত হয়।
লিমিটেড স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিক: কেবলমাত্র নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে এটি ব্যবহৃত হয়।
আপনার কোন রোগে কী ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক নেবেন, তা ঠিক করবেন একমাত্র চিকিৎসক।

অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে সাধারণত যে রোগগুলো কমে:
১. ত্বকের সংক্রমণ।
২. নিউমোনিয়া।
৩. কিডনি বা অন্ত্রের সংক্রমণ।
৪. সাইনাস সংক্রমণ।
৫. কানে সংক্রমণ।
৬. মেনিনজাইটিস।
৭. দাঁতের সংক্রমণ।

অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
কিছু ক্ষেত্রে, অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ক্ষতিকারক জীবাণু নষ্ট করার পাশাপাশি আপনার শরীরের ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলোকেও নষ্ট করে দেয়। এতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। সুতরাং, অ্যান্টিবায়োটিকের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে আপনার শরীরে বিপরীত প্রভাব পড়তে পারে। ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে।

অ্যান্টিবায়োটিকের আরও কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো:

১. ডায়রিয়াল সংক্রমণ।
২. বমি বমি ভাব।
৩. পেটে ব্যথা।
৪. পেশিতে টান বা ব্যথা।
৫. পায়খানার সঙ্গে রক্তপাত।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy