অস্টিওআর্থ্রাইটিস, লক্ষণ ও প্রতিকার, নারীদের ঝুঁকি বেশি

বিশ্বজুড়ে বয়স্কদের মধ্যে অস্টিওআর্থ্রাইটিস একটি সাধারণ সমস্যা, যা আর্থ্রাইটিসের সবচেয়ে প্রচলিত রূপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে ৯.৬% এবং নারীদের মধ্যে ১৮.০% এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগ প্রধানত হাত, নিতম্ব এবং হাঁটুকে প্রভাবিত করে। যদিও এর সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়, তবে সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাপনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

অস্টিওআর্থ্রাইটিস কী?
অস্টিওআর্থ্রাইটিসকে ‘ডিজেনারেটিভ জয়েন্ট ডিজিজ’ও বলা হয়। জয়েন্টের হাড়ের শেষ প্রান্তে থাকা কার্টিলেজ নামক নরম টিস্যু ক্ষয় হয়ে গেলে এই রোগ হয়। কার্টিলেজের কাজ হলো অস্থিসন্ধিকে মসৃণ রাখা এবং জয়েন্টের ওপর চাপ নিয়ন্ত্রণ করা। এর ক্ষয় হলে জয়েন্ট নড়াচড়া করতে ব্যথা হয়। এই সমস্যা সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং সময়ের সাথে সাথে আরও খারাপ হতে থাকে।

লক্ষণ:
এই রোগের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

জয়েন্টে ব্যথা: বিশেষ করে আক্রান্ত স্থানে নাড়াচাড়া করলে ব্যথা বাড়ে।

ফোলাভাব ও লালচেভাব: আক্রান্ত জয়েন্ট ফুলে যেতে পারে এবং লাল হয়ে যেতে পারে।

হাত ও আঙুলে সমস্যা: অনেক সময় ছোটখাটো কাজ যেমন বোতাম লাগানো বা চাবি ঘোরানো কঠিন হয়ে পড়ে।

শক্ত হয়ে যাওয়া: ঘুম থেকে ওঠার পর বা দীর্ঘক্ষণ বিশ্রামের পর জয়েন্ট শক্ত হয়ে যেতে পারে।

কাদের ঝুঁকি বেশি?
ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তি, স্থূল, বাতের পারিবারিক ইতিহাস আছে এমন ব্যক্তি এবং যারা ভারী জিনিস তোলার কাজ করেন, তাদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে বিশেষ করে মেনোপজের পর এই রোগের সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। ধূমপান এবং পূর্ববর্তী কোনো আঘাতও ঝুঁকির কারণ হতে পারে।

প্রতিকার:
এই রোগের ব্যথা কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যথানাশক ওষুধ খেলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। চিকিৎসকরা রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘অ্যান্টিরিউম্যাটিক ড্রাগস’ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এছাড়াও, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিন সমৃদ্ধ খাদ্য (যেমন হলুদ) এই রোগের চিকিৎসায় সহায়ক হতে পারে। সঠিক খাবার গ্রহণ, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy