স্ট্রোকের এই ১৩টি লক্ষণ কখনও এড়িয়ে যাবেন না, সতর্ক হন

স্ট্রোক একটি গুরুতর ও জীবনঘাতী স্বাস্থ্য সমস্যা, যা মস্তিষ্কের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে ঘটে। এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যা ব্রেন ড্যামেজ, প্যারালাইসিস এমনকি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সময়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিনে রাখা এবং দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

স্ট্রোকের ১৩টি প্রাথমিক লক্ষণ
১. মুখের অর্ধেক অসাড় হয়ে পড়া: হঠাৎ করে মুখের একপাশ অসাড় বা অবশ হয়ে গেলে, হাসতে গেলে বা কথা বলতে গেলে মুখের একপাশ নাড়াতে না পারলে তা স্ট্রোকের স্পষ্ট লক্ষণ।

২. একটি বাহুতে দুর্বলতা: কোনো একটি বাহুতে এমন দুর্বলতা বা অসাড়তা অনুভব করা যে তা মাথার ওপর তুলতে পারছেন না।

৩. কথা বলায় অস্পষ্টতা: হঠাৎ করে কথা বলতে গিয়ে অস্পষ্ট আওয়াজ বা জড়তা দেখা দেওয়া। এটি মস্তিষ্কের কথা বলার অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারণে ঘটে।

৪. দেহের একপাশে দুর্বলতা বা প্যারালাইসিস: শরীরের একপাশে দুর্বলতা বা প্যারালাইসিস হলে তা স্ট্রোকের গুরুতর লক্ষণ। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে এটি স্থায়ী হতে পারে।

৫. পিন বা সুচ ফোটার অনুভূতি: কোনো কাজের মাঝে হঠাৎ করে শরীরের কোনো অংশে পিন বা সুচ ফোটার মতো অস্বস্তিকর অনুভূতি হওয়া।

৬. ঝাপসা দৃষ্টি: একটি চোখের দৃষ্টি হঠাৎ করে ঝাপসা হয়ে আসা। এটি মস্তিষ্কের দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী অংশে রক্ত সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে ঘটে।

৭. হঠাৎ ঝিমুনি: মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে হঠাৎ করে ঝিমুনি বা অজ্ঞান হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

৮. হাঁটা-চলায় অস্বাভাবিকতা: হঠাৎ করে হাঁটাচলায় অসামঞ্জস্য বা ভারসাম্য হারানো।

৯. তীব্র মাথাব্যথা: আগের যেকোনো মাথাব্যথার চেয়ে অনেক বেশি তীব্র ও অসহ্য মাথাব্যথা হওয়া।

১০. স্মৃতি হারানো: হঠাৎ করে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া বা জিনিসপত্র ভুলে যাওয়া।

১১. আচরণগত পরিবর্তন: হঠাৎ করে অস্বাভাবিক রাগ, উদ্বেগ বা আচরণে পরিবর্তন দেখা দেওয়া।

১২. লালা গেলায় সমস্যা: হঠাৎ করে লালা গেলা কঠিন হয়ে পড়া বা লালা মুখ বেয়ে পড়া।

১৩. মাংসপেশিতে খিল ধরা: শরীরের একপাশের মাংসপেশি শক্ত হয়ে আসা বা খিল ধরা।

স্ট্রোক হলে কী করবেন?
স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরি। স্ট্রোকের চিকিৎসায় প্রতিটি মিনিটই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলে ব্রেন ড্যামেজ বা প্যারালাইসিসের ঝুঁকি কমে যায়।

স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়
স্ট্রোক প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য গ্রহণ, ধূমপান ও মদ্যপান এড়ানো, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং মানসিক চাপ কমালে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়।

সচেতনতাই মূল চাবিকাঠি
স্ট্রোকের লক্ষণগুলো চিনে রাখা এবং সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া জীবন বাঁচাতে পারে। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে কোনোভাবেই অবহেলা করবেন না। দ্রুত চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন।

স্ট্রোক একটি জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যা, যা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy