শরীরের অতিরিক্ত চর্বিকে বলুন টাটা বাইবাই, এই টোটকা শুধু আপনার জন্য

আজকালকার দিনে চর্বি বা মেদ নিয়ে কমবেশি নাজেহাল সবাই। খাওয়া দাওয়ায় রেস্ট্রিকশন থেকে শুরু করে নানা রকমের ডায়েটের মাঝে ফেঁসে রয়েছি আমরা। কিন্তু সমাধান রয়েছে হাতের মুঠোয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসা যোগাসনের হাতে নিজেকে সমর্পিত করুন রোজ ত্রিশ মিনিট। একমাসের মধ্যে রেজাল্ট পেতে বাধ্য।

রোজ নিজেকে সময় দিন মাত্র ত্রিশ মিনিট। সকাল বা বিকেল যখন আপনার সুবিধা হয়। করুন ৬টি যোগাসন। আর একমাসের মধ্যে শরীরের অতিরিক্ত চর্বিকে বলুন টাটা বাইবাই।

১) মালাসন:
প্রাথমিক পর্যায়ের এই যোগসনটি ঠিক ভাবে অনুশীলন করা একান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটির অর্থ উবু হয়ে বসা।

পদ্ধতি:
প্রথমে উবু হয়ে বসুন তারপর পায়ের পাতা দুটি একে অপরের থেকে একটু দূরত্বে নিয়ে এসে ফাঁক রাখুন।
হাত দুটো সামনের দিকে প্রসারিত করে অঞ্জলি মুদ্রা গঠন করে হাঁটুর ওপর ভর দিয়ে সামনের দিকে নিয়ে আসুন।
এভাবে কিছুক্ষন বসে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসুন। এইভাবে কয়েকবার করুন।
উপকারিতা:
এই আসনের ফলে পায়ের নিচের অংশে রক্তচলাচল খুব ভালো হয়।
আপনার হিপ ও থাই অংশ প্রশস্ত ও সঠিক আকার পায়।
গোড়ালির হাড় মজবুত হয়ে ওঠে।
মেটাবলিক রেট ত্বরান্বিত হয় ও পায়ের হ্যামস্ট্রিং এর চোট সেরে যায়।
২) উস্ট্রাসন:
এই আসন করাকালে দেহের পশ্চার অনেকটা উটের মতো দেখতে হয়।

পদ্ধতি:
হাঁটু গেড়ে বসে শরীরকে সোজা রাখুন। তারপর পেছনদিক থেকে হাত দুটোকে নিয়ে এসে গোড়ালি স্পর্শ করুন।
মেরুদন্ড সোজা রেখে মাথাকে উলটো দিকে ঝুঁকিয়ে দিন।
তারপর পেট ও বুক যথাসম্ভব সামনের দিকে প্রসারিত করুন।
এই অবস্থায় কিছু সেকেন্ড নিজেকে রেখে ঘুরে আবার অনুশীলন করুন।
উপকারিতা:
কোমরে বাত, চর্বি, কোলেস্টেরল, লো ব্লাড প্রেসার এর সমস্যা এক নিমেষে দূর করবে।
হাঁপানি বা ব্রঙ্কাইটিসকেও করবে কাবু।
৩) নটরাজাসন:
বলা হয় দেবাদি দেব মহাদেব এর তান্ডব সময়ের নৃত্য ভঙ্গিমারত একটি আসন হলো এটি। তাই নটরাজ এর নামে নামাঙ্কিত এই আসন।

পদ্ধতি:
মাটির ওপর সোজা ভাবে দাঁড়িয়ে ডান পা হাঁটুর কাছে ভাঁজ করতে হবে।
এরপর বাম পাকে প্রসারিত করে সামনের দিকে তুলে ধরুন। দুটো পায়ের মধ্যে পরিমিত গ্যাপ রাখুন।
ডান হাতের কনুই অব্দি ভাঁজ করে বরাভয় মুদ্রার মতো করে সামনের দিকে এগিয়ে আনুন আর বাম হাত ভাঁজ করে আঙ্গুল গুলি টানটান রেখে মাটির অভিমুখে রাখুন।
দৃষ্টি হবে সোজা সামনের দিকে। এই অবস্থায় কিছুক্ষন থেকে মোটামুটি ১০ সেকেন্ড মতো।
তারপর পা পরিবর্তন করে বিপরীতক্রমে আসনটি অনুশীলন করতে হবে।
উপকারিতা:
পেলভিক অঞ্চলের মধ্যে প্রচুর পরিমানে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
এনার্জি ব্লক খুলে দেয়। শরীরের ভারসাম্য ও মাংসপেশি টোন করতে উপকারী।
৪) নভাসন:
এই আসনটি করার সময় বডির আকৃতি হয় অনেকটা ইংরেজি V অক্ষরের মতো। সকালে খালি পেটে অভ্যাস করা উচিত।

পদ্ধতি:
চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর মাথা সোজা রেখে নিজের পা দুটোকে জড়ো করে আনুন।
হাত দুটোকে শরীরের দুপাশে আনত করে তা উপরের দিকে ৪৫° কোণে উপরের দিকে তুলুন।
নিতম্বের উপর ভর দিয়ে পা দুটি উল্লম্ব অবস্থানে আনুন এবং মাথা ও পিঠ ভূতল থেকে সাধ্যমত তুলুন।
এইরকম অবস্থায় কয়েক সেকেন্ড থাকুন। তারপর শবাসনে বিশ্রাম নিয়ে ঘুরে আবার করুন।
উপকারিতা:
পেটের চর্বি একদম কমে যাবে।
যকৃৎ, হার্ট, কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে এর জুড়ি নেই।
৫) কোণাসন:
একটি নির্দিষ্ট কোন তৈরি করে এই আসন অভ্যাস করতে হয় বলে একে কোনাসন বলে। প্রসবের পর এই আসন করতে পারলে খুবই লাভ হয়। সাথে যদি সুপ্ত কোনাসন ও করা যায়।

পদ্ধতি:
সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পায়ের মাঝখানে ফাঁকা করে দাঁড়ান।
ডান হাত কানের পাশে রেখে এবং বামহাত ভূমির সাথে সোজা কোনে রেখে শরীরকে ডান দিকে যথাসম্ভব বাঁকান।
এইভাবে আবার উল্টো দিকেও করুন। শ্বাস থাকুক স্বাভাবিক।
উপকারিতা:
সমগ্র শরীরে স্ট্রেচিং হয়ে যায়। রক্তচলাচল ঠিক থাকে।
কোমরের খিঁচ বা টান সরিয়ে তোলে আর বুকের রিব শক্তিশালী করে।
৬) আনন্দ বলাসন:
পদ্ধতি:
চিৎ হয়ে শুয়ে পা দুটোকে হাঁটু অব্দি ভেঙে ভি এর আকৃতি দান করুন।
এবার শরীরের দুপাশে হাত দুটি প্রসারিত করে হাঁটুর মাঝখান দিয়ে দুটি পায়ের পাতা তালুবদ্ধ করুন।
ঘাড় ও মাথা আনুভূমিক রেখে সরলরেখায় অবস্থান করবে। টর্সকে পুশ করুন।
এই অবস্থানে কিছুক্ষণ থাকুন।
অনেক ভারী আসন করার পর রিলাক্স করার জন্য এটি উত্তম।
উপকারিতা:
উরু, জাং ইত্যাদির কার্যক্ষমতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে এই আসন।
মাসলের নমনীয়তা বাড়ায়।
মেয়েদের জরায়ু, ডিম্বাশয় এর সঠিক খেয়াল রাখতে এবং ঋতুস্রাব জনিত অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেয়।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy