হাঁটার মতো সহজ ও উপকারী ব্যায়াম আর একটিও খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই ৮ থেকে ৮০- সকলকেই হাঁটার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। এতেই সুস্থ থাকে শরীর। মন থাকে ভালো।
গবেষকদের কথায়, শরীর সুস্থ রাখতে আলস্য কাটিয়ে ঘাম ঝরাতে হবে। তাহলেই একাধিক রোগের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব হয়। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে সকালের কয়েক মিনিট হাঁটা।আসলে হাঁটা হল এরোবিক এক্সারসাইজ। এই ব্যায়ামটি করার মাধ্যমে গোটা শরীরের ব্যায়াম হয়। পেশি থেকে হাড় নিজের কাজটি ঠিকমতো করে যেতে পারে। তাই প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে হাঁটা প্রয়োজন।
আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকাল সকাল হাঁটা হল অত্যন্ত উপকারী। তাই ভোর ভোর উঠে তরতাজা বায়ুতে মাত্র ৩০ মিনিট হেঁটে নিন। এই কাজটুকু করতে পারলেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
১. ইমিউনিটি বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চাঙ্গা থাকলে একাধিক সমস্যাকে হেলায় হারিয়ে দেওয়া যায়। কাছে আসতে পারে না বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার ইমিউনিটি বাড়িয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে মর্নিং ওয়াক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত সকালে হাঁটা ব্যক্তিরা সাধারণ জ্বরজারি, ঠান্ডা লাগার মতো রোগ বিরেতে কম ভোগেন। তাই সকাল সকাল হাঁটতে বেরনো অত্যন্ত জরুরি।
২. ব্লাড সার্কুলেশন ঠিকমতো হয়
আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে খাবার ও অক্সিজেন পৌঁছে দেয় রক্ত। এর মাধ্যমেই কোষ বেঁচে থাকে। এবার কোনও কারণে কোষে কোষে রক্ত না পৌঁছাতে পারলেই চিত্তির! তখন কোষের মৃত্যু হয়! তবে চিন্তা নেই মশাই, দেহের ব্লাড সার্কুলেশন ঠিক রাখার কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে হাঁটার মতো ব্যায়াম। রোজ সকালে হাঁটলেই দেহের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে শরীর সুস্থ থাকে।
৩. হার্টের বন্ধু হাঁটা
হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গুণিতক হারে বাড়ছে। আগে যেখানে বেশি বয়সে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওর পিছু নিত, সেখানে এখন কম বয়সেই এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। প্রসঙ্গত, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলেও জীবনযাত্রার অঙ্গ করে তুলতে হবে হাঁটাকে। এক্ষেত্রে নিয়মিত হাঁটতে পারলেই হৃৎপিণ্ড নিজের কাজটি ঠিকমতো করতে পারে। এমনকী বিভিন্ন অসুখের ফাঁদ এড়ানো যায়। তাই নিজেকে বাঁচাতে চাইলে রোজ মর্নিং ওয়াক করুন।
৪. জয়েন্টের জোর বাড়ায়
জয়েন্টের ব্যথা কমাতে চাইলেও নিয়ম করে হাঁটা জরুরি। ওয়েব মেড জানাচ্ছে, সকালে হাঁটলে জয়েন্ট থেকে উপকারী ফ্লুুইড নির্গত হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান পায় অস্থিসন্ধি। এই কারণেই জয়েন্টের জোর বাড়ে। এমনকী কমে ব্যথা। তাই জয়েন্টের ব্যথায় ভুক্তভোগীরা অবশ্যই মর্নিং ওয়াকে যান। তবে এক্ষেত্রে হাঁটার আগে অবশ্যই নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনিই আপনাকে সঠিক উপদেশ দিতে পারবেন।
৫. সুগার-প্রেশার থাকে কন্ট্রোলে
এখন তো ঘরে ঘরে সুগার-প্রেশার। মুশকিল হল, এই অসুখকে ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে চোখ, কিডনি, হার্ট ও মস্তিষ্কে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যেন তেন প্রকারেণ সুগার কমাতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে সকালের ৩০ মিনিটে হাঁটা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মর্নিং ওয়াক করলেই এই ধরনের বিপাকীয় সমস্যা থাকে নিয়ন্ত্রণে। তাই কাল থেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটা শুরু করে দিন।