পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় দুধ এবং কলা উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। দুধ ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস, যা আমাদের দাঁত ও হাড় মজবুত করে এবং শরীরে শক্তি যোগায়। অন্যদিকে, কলা আয়রনের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার, যা রক্তকণিকা ও হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়ক এবং দ্রুত শক্তি প্রদানে কার্যকরী।
অনেকেই দুধ-কলা দিয়ে ভাত মাখিয়ে খেতে পছন্দ করেন, আবার ব্যানানা মিল্কশেক বা স্মুদিও বেশ জনপ্রিয়। সাধারণত মনে করা হয়, দুধ ও কলা একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে তা শরীরের জন্য উপকারী। তবে পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা এবং আয়ুর্বেদ শাস্ত্র এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, কলা ও দুধ একসঙ্গে খেলে তা শরীর সহজে হজম করতে পারে না। এই মিশ্রণ শরীরে ‘কফ’-এর প্রভাব বৃদ্ধি করে। যেহেতু দুধ ও কলা উভয়ই শীতল প্রকৃতির, তাই একসঙ্গে খেলে তা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। নিয়মিত ব্যানানা স্মুদি পান করলে সাইনাস ও সর্দি-কাশির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আয়ুর্বেদের বিশ্বাস অনুযায়ী, যেকোনো ফলের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেলে শরীরে কফের প্রভাব বাড়ে। শ্বাসকষ্টে যারা ভোগেন, তাদের কখনোই কলা ও দুধ একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। এটি তাদের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদেরও কলা ও দুধ একসঙ্গে খেতে নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, যথেষ্ট সময় ব্যবধান রেখে কলা ও দুধ আলাদাভাবে গ্রহণ করা গর্ভবতী মহিলা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য উপকারী হতে পারে। কারণ কলা ও দুধ একসঙ্গে খেলে শরীরে টক্সিন সৃষ্টি হতে পারে, যা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। তাই এই সময় দুধ-কলা একসঙ্গে খাওয়া বাদ দেওয়াই শ্রেয়।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, দুধ এবং কলার পুষ্টিগুণ পেতে হলে এগুলো আলাদাভাবে গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। যদি একান্তই দুধ ও কলা একসঙ্গে খেতে চান, তবে পরিমিত পরিমাণে এবং বিশেষত যাদের শ্বাসকষ্ট বা হজমের সমস্যা রয়েছে, তাদের এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকা উচিত। সুস্থ থাকতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা এবং যেকোনো খাবার গ্রহণের পূর্বে তার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখা অপরিহার্য।
