লবণ আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য একটি খনিজ পদার্থ। দেহে জলের ভারসাম্য রক্ষা করা, স্নায়ুর সঠিক সংকেত প্রেরণ এবং পেশির সংকোচন-প্রসারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে লবণের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তবে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কম লবণ খান তাদের ৮০ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপের শিকার হন না। অতিরিক্ত লবণ শরীরের উপর দীর্ঘমেয়াদী নানা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
কতটুকু লবণ প্রয়োজন?
একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন প্রায় তিন গ্রাম লবণ প্রয়োজন। এর মধ্যে স্বাভাবিক খাবারের মাধ্যমেই এক থেকে দেড় গ্রাম লবণ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিন এক চা চামচ বা পাঁচ গ্রামের কম লবণ গ্রহণ করলে উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার রোগ, স্ট্রোক এবং করোনারি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।
বেশি লবণ খেলে যা হয়:
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ, পক্ষাঘাত এবং অন্ধত্বের মতো জটিল রোগের কারণ হতে পারে।
হাড়ের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়।
শারীরিক স্থূলতা দেখা দিতে পারে এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে।
ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং অ্যাজমার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়।
যা করবেন:
রান্নায় অবশ্যই আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করুন। বিটলবণ সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলুন।
প্রতিদিন রান্নায় যে পরিমাণ লবণ ব্যবহার করা হয়, তাতেই সাধারণত শরীরের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। তাই খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবণ যোগ করার কোনো প্রয়োজন নেই।
খাবার টেবিলে লবণদানি রাখবেন না।
চিপস, সস, চিজ এবং স্ন্যাক্সজাতীয় খাবারে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই কম লবণযুক্ত খাবার নির্বাচন করুন।
শিশুদেরও বেশি লবণযুক্ত খাবার দেওয়া উচিত নয়।
সতর্কতা:
দৈনন্দিন খাবারের তালিকা থেকে লবণ সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া উচিত নয়। কারণ লবণের অভাবে রক্তচাপ কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, শরীরের চাহিদার তুলনায় যেন লবণের পরিমাণ বেশি না হয়। পরিমিত লবণ গ্রহণই সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি।